১৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
২রা জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
১৩ই জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    আফগান মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি

    আফগানিস্তানের তালিবান সরকার প্রাথমিকের পরে মেয়েদের হাইস্কুলে যাওয়ার ক্ষেত্রে আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল । তবে সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছিলেন আফগানিস্তানের নারীরা।

    বুধবার হঠাৎ এক সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে আফগান মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তালিবান। আফগান সরকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিশ্বজুড়ে।

    তিন মাস আগেই দেশটিতে হাজার হাজার নারী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসেছিল। এরপরেই নতুন করে তালেবান কর্তৃপক্ষ এই নির্দেশ জারি করলো।

    ওই সিদ্ধান্তের পিছনে কী কারণ রয়েছে, তালিবান সরকার তা স্পষ্ট করেনি।  কতদিন ধরে ওই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে জানানো হয়নি সেটাও। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তে ভেঙে পড়েছেন আফগান ছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার  সকালে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গেটের বাইরে অনেককেই তাই কাঁদতে দেখা গেছে। একে অপরকে জড়িয়ে সান্ত্বনাও দিতে দেখা গেছে।

    আজ সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে নিরাপত্তার কড়াকড়ি ছিলো চোখে পড়ার মতো। সংবাদমাধ্যমকে আশপাশে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছিল না। ছবি তোলা বা খবর করার উপরেও কড়া নজর রাখা হচ্ছিল। কোনো ছাত্রীকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি আজ। তবে ক্লাস করবেন না, এই শর্তে কিছু কিছু জায়গায় ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হয়।

    কর্তৃপক্ষ জানান, ওসব ছাত্রীর কিছু প্রশাসনিক কাজ বাকি ছিলো, তাই তারা সেগুলো সারতে এসেছিলেন। কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র রাহিমুল্লা নাদিম সংবাদমাধ্যমকে আজ থেকে ছাত্রীদের জন্য ক্লাস বন্ধ হওয়ার খবর নিশ্চিত করেন।

    কাবুলের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে আজ প্রতিবাদ জানান কিছু তরুণী। তালিবান সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা গেছে তাদের।  তারা বলেছেন, ‘দয়া করে শিক্ষার মধ্যে রাজনীতিকে আনবেন না। আরও একবার আফগান মেয়েদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হলো। আমরা বাদ পড়তে চাই না।’

    এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তালিবানি মুখপাত্রেরা অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন। আফগান বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, খোদ তালিবান নেতা হেবায়তুল্লা আখুন্দজ়াদা ও হাতে গোনা কয়েক জন শীর্ষ নেতার নির্দেশে এই ফরমান জারি হয়েছে। জনসমক্ষে এই তালিবানি নেতাদের বিশেষ দেখা যায় না। নিজের জন্ম ভিটে কন্দহর থেকেই সরকার পরিচালনার কাজ করে থাকেন আখুন্দজ়াদা। কাবুল সরকারিভাবে আফগানিস্তানের রাজধানী হলেও মূলত কন্দহর থেকেই গোটা দেশ পরিচালনার নানা নির্দেশ আসে বলে জানায় বিশেষজ্ঞেরা।

    এর আগে,আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে নারীদের পার্কে ও জিমে যাওয়া নিষিদ্ধ করে  দেশটির তালেবান সরকার।

    গত বছর আশরাফ গণি’র সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতায় বসে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান। তখন থেকেই নারীদের শিক্ষার বিষয়ে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে তারা। একই বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী-পুরুষ শিক্ষার্থীদের আলাদা শ্রেণীকক্ষে বসার নিয়ম চালু করে। এমনকি পশু চিকিৎসা, ইঞ্জিনিয়ারিং, অর্থনীতি, কৃষি এবং সাংবাদিকতায় অধ্যায়নের বিষয়ে নারীদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে।

    মাহফুজা ২২-১২

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর