১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন; দিনের শেষে ভারতের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২৭৮রান

    ৪৮ রানে ৩ উইকেট, ১১২ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর দিনটা বাংলাদেশের বোলারদেরই ধরে নিয়েছিলো প্রায় সবাই। কিন্তু চেতেশ্বর পুজারা এবং স্রেয়াশ আয়ার মিলে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১৪৯ রানের বড় জুটি গড়ে বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছিলেন।

    কিন্তু দিনের শেষ ভাগে এসে দ্রুত দুটি উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে আবার খেলায় ফেরান দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম এবং মেহেদী হাসান মিরাজ। ৯০ রান করা চেতেশ্বর পুজারাকে ফেরান তাইজুল এবং দিনের একেবারে শেষ বলে অক্ষর প্যাটেলকে এলবিডব্লিউতে শিকার করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

    যার ফলে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন ৬ উইকেট হারিয়ে ২৭৮ রান সংগ্রহ করেছে ভারত। ৮২ রান নিয়ে উইকেটে রয়েছেন স্রেয়াশ আয়ার। তাইজুল ৩টি, মেহেদী হাসান মিরাজ ২টি এবং খালেদ আহমেদ নেন ১টি উইকেট।

    সকালে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন লোকেশ রাহুল। ব্যাট করতে নেমে রাহুল এবং শুভমান গিল মিলে ৪১ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হন। শুভমান গিল এ সময় আউট হন ২০ রান করে। লোকেশ রাহুল আউট হন ২২ রান করে। বিপজ্জনক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা ছিল বিরাট কোহলির। শেষ ওয়ানডে তে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন তিনি।

    কিন্তু কোহলিকে উইকেটেই দাঁড়াতে দেননি তাইজুল ইসলাম। মাত্র ৫টি বল খেললেন তিনি। পঞ্চম বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান বিরাট কোহলি। শার্প টার্ন ছিল। বল প্যাডে লাগতেই আঙ্গুল তুলে দেন আম্পায়ার। কিন্তু পুজারার সঙ্গে আলোচনা করে রিভিউ চেয়ে নেন কোহলি। রিভিউ দেখে বোঝা গেলো, পরিষ্কার আউট। আম্পায়ার নিজের সিদ্ধান্তই বহাল রাখলেন। ১ রান করে বিদায় নেন কোহলি।

    ৪৮ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর ৬৪ রানের জুটি গড়ে তোলেন পুজারা এবং রিশাভ পান্ত। ওয়ানডে স্টাইলে খেলে ৪৫ বলে ৪৬ রান সংগ্রহ করেন পান্ত। এরপরই মেহেদী হাসান মিরাজের বলে পেছনের পায়ে দাঁড়িয়ে পয়েন্টে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পই হারিয়ে বসেন তিনি।

    ৩২তম ওভারে ৪র্থ উইকেট পড়ার পর ক্রিজে এসে সেট হয়ে যান পুজারা এবং স্রেয়াশ আয়ার। দু’জন খেলেন একেবারে শেষ বিকেল পর্যন্ত। ১৪৯ রানের জুটি গড়ে ভারতকে একটা ভালো জায়গায় নিয়ে আসেন। দিনের কেবল ৫.৪ ওভার বাকি তখন। এ সময় তাইজুলের হালকা ইনসুইং করা বলে বোল্ড হয়ে গেলেন পুজারা। ২০৩ বল খেলে ৯০ রান করেন তিনি।

    অবশ্য তার আগেই দুটি উইকেট পড়তে পারতো। একটি ক্যাচ ছেড়ে দেন এবাদত হোসেন। ৭৬তম ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে ডিপ মিডউইকেটে শ্রেয়াস আয়ারের সহজ ক্যাচ ফেলে দেন তিনি। আয়ার তখন ব্যাট করছিলেন ৬৭ রানে। এরপর ৮৪ তম ওভারেই এবাদত হোসেনের বল স্ট্যাম্প ছুঁয়ে যায়। কিন্তু বেল না পড়ার কারণে এবারও বেঁচে যান স্রেয়াশ আয়ার। পরের ওভারেই পড়লো পুজারার উইকেট।

    দিনের শেষ ওভারের বল করতে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম বলেই অক্ষর প্যাটেল একটি বাউন্ডারি মারেন। পরের চার বল কোনো রান নিতে পারেননি। শেষ বলে ব্যাট মিস করেন প্যাটেল বল গিয়ে আঘাত হানে প্যাডে। আবেদন করতেই আঙ্গুল তুলে দেন আম্পায়ার। রিভিউ নেন প্যাটেল। কিন্তু রিভিউতে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকলো। শেষ বলে নিশ্চিত হলো উইকেট।

    বাংলাদেশের ১০১তম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হচ্ছে জাকির হাসানের। ওপেনার হিসেবে খেলছেন ২৪ বছর বয়সী ক্রিকেটার। তবে তার সঙ্গী নির্বাচনে যথেষ্ট চমক দেখিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। অফফর্মে থাকা মাহমুদুল হাসান জয়কে আরেকটি সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হলেও তার ওপর আস্থা রাখতে পারেনি দল। ফলে জাকিরের সঙ্গে ওপেনিংয়ে দেখা যাবে নাজমুল হোসেন শান্তকে।

    বাংলাদেশ ইনিংসের মাঝপথে শক্তি বাড়িয়েছে। নেওয়া হয়েছে চোট কাটিয়ে দলে ফেরা ইয়াসির আলী রাব্বিকে। তবে তিন নম্বরে কে ব্যাটিং করবেন তা নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। মুশফিকুর রহিম চারে থিতু হয়েছে। এরপর আছেন লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, ইয়াসির আলী, কাজী নুরুল হাসান সোহান। তিনে লিটনকে ব্যাটিং করতে দেখলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

    বোলিংয়ে বাংলাদেশ দুই পেসার ইবাদত হোসেন ও সৈয়দ খালেদকে নিয়েছে। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানসহ বাকি দুই স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম।

    ভারতও দুই পেসার নিয়ে নেমেছে। মোহাম্মদ সিরাজের সঙ্গে আছেন উমেশ যাদব। এছাড়া অক্ষর পাটেল,রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও কুলদ্বীপ যাদবকেও নিয়েছে অতিথিরা। বিরাট কোহলির পিঠে চোট নিয়ে খানিকটা আলোচনা থাকলেও তাকে নিয়েই খেলতে নামছে টিম ইন্ডিয়া।

    ১২ বছর পর চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট খেলতে নামছে ভারত। ২০১০ সালে সবশেষ তারা এই মাঠে খেলেছিল। এর আগে খেলেছিল ২০০৭ ও ২০০৪ সালে।

    বাংলাদেশ একাদশ হলো– জাকির হাসান, ইয়াসির আলী রাব্বী, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, কাজী নুরুল হাসান সোহান, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, ইবাদত হোসেন ও সৈয়দ খালেদ।

    ভারত একাদশ হলো- লোকেশ রাহুল, শুভমান গিল, চেতেশ্বর  পূজারা, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াশ আইয়ার, রিশাভ পান্ত, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, অক্ষর পাটেল, কুলদীপ যাদব, উমেশ যাদব ও মোহাম্মদ সিরাজ।

    মাহফুজা ১৪-১১

     

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর