কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে আজ মুখোমুখি হচ্ছে পর্তুগাল ও মরোক্কো। আল থুমামা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু হবে ম্যাচটি। এসবের মাঝেই শনিবার কোয়ার্টার ফাইনালে মাঠে নামছে পর্তুগালের ‘নাবিক’-রা। প্রতিপক্ষ চলতি বিশ্বকাপের সবচেয়ে চমক লাগানো দল ‘অ্যাটলাসের সিংহ’ মরক্কো।
কাতার বিশ্বকাপ মরোক্ক ৩৬ বছর পর নকআউট পর্বে এসে তারা স্পেনের মতো শক্তিশালী দলকে টাইব্রেকারে পরাস্ত করে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে।
পর্তুগাল তৃতীয়বারের মতো সেমিফাইনালে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে প্রথম সেমিফাইনাল খেলেছিল পর্তুগীজরা। তার ৪০ বছর পর সবশেষ ২০০৬ সালে খেলেছিল শেষ চার। সেবার ইংল্যান্ডের কাছে টাইব্রেকারে হেরে থেমেছিল তাদের যাত্রা। আর স্থান নির্ধারণী ম্যাচে জার্মানির কাছে ৩-১ ব্যবধানে হেরে চতুর্থ হয়ে দেশে ফিরেছিল।
তুর্কি গনসালো রামোসের হ্যাটট্রিকে সুইজারল্যান্ডকে ধরাশায়ী করেছে ৬-১ গোলের ব্যবধানে। যা কাতার বিশ্বকাপে সবচেয়ে সুন্দর পারফরম্যান্সের ম্যাচ ছিল।
তবে স্পেনের বিপক্ষে যে পারফরম্যান্স করে মরোক্কো কোয়ার্টার ফাইনালে এসেছে তাতে উত্তর আফ্রিকার দলটিকে বেশ সমীহ করছে পর্তুগালও। তাইতো তারা বেশ সতর্কও। যেমনটা বলেছেন ব্রুনো ফার্নান্দেস, ‘এটি একটি কঠিন ম্যাচ হবে। মরক্কো সত্যিই ভালো দল এবং তারা গ্রুপপর্বে সেরা হয়ে এসেছে। এরপর স্পেনকে হারিয়েছে। তাই আমরা তাদের কোয়ালিটি সম্পর্কে অবগত। তাদের বিপক্ষে আমরা যথারীতি আমাদের সেরা খেলাটি খেলতে চাই। আমাদের আসলে নিজেদের উপর ফোকাস করতে হবে এবং ম্যাচটি জিততে আমাদের কী করতে হবে তা বুঝতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আমরা আমাদের খেলাটি খেলতে পারলে, আমাদের কাজটি করতে পারলে ভালো কিছু হবে। যদিও আমরা জানি এটা সত্যিই কঠিন হবে।’
মরোক্কোর হয়ে দারুণ খেলছেন গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনু। তার কৃতিত্বে আফ্রিকান দলটি এবারের বিশ্বকাপে চার ম্যাচ খেলে তিনটিতেই কোনো গোল হজম করেনি। যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোনো আফ্রিকান দলের সর্বোচ্চ। তবে পর্তুগালের মতো শক্তিশালী দল আর গনসালো রামোস, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, ব্রুনো ফার্নান্দেসদের মতো খেলোয়াড়দের বিপক্ষে ক্লিন শিট রাখা হয়তো কঠিনই হবে তাদের জন্য।
ক্যামেরুন ১৯৯০ সালে, সেনেগাল ২০০২ সালে ও ঘানা ২০১০ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছিল।
চলতি বিশ্বকাপে পর্তুগাল নিজেদের সেরা ছন্দে রয়েছে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ঘানাকে ৩-২ গোলে হারানোর পর লুইস সুয়ারেজের উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হারিয়েছে তারা। দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ২-১ গোলে হারলেও শেষ ষোলোতে জায়গা করে নেয় গ্রুপ টপার হিসেবেই। দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে আবার সুইজারল্যান্ডকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দেয় পর্তুগাল। এই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন গনসালো রামোস।
অন্যদিকে চলতি বিশ্বকাপে একের পর এক দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে মরক্কো। কাতারে এখনও পর্যন্ত অপরাজিত তারা। ক্রোয়েশিয়ার কাছে গোলশূন্য ড্র করে অভিযান শুরু করা মরক্কো বেলজিয়াম এবং কানাডাকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থেকে শেষ ষোলোতে পা রাখে। দ্বিতীয় রাউন্ডে টাইব্রেকারে তারা হারায় লুইস এনরিকের স্পেনকে। আজ মরক্কোর সামনে পর্তুগাল। এই ম্যাচ জিতলেই তারা গড়বে ইতিহাস।
তাছাড়া ইউরোপিয়ান দলগুলোর বিপক্ষে নকআউট পর্বে আফ্রিকান দলগুলোর রেকর্ড খুব একটা ভালো নয়। নকআউট পর্বে আফ্রিকান দলগুলো ইউরোপের দলগুলোর সঙ্গে আগের ১১ বারের দেখায় মাত্র দুটিতে জয় পেয়েছিল। তার মধ্যে গেল মঙ্গলবার স্পেনকে হারানোও ম্যাচটিও রয়েছে।
অবশ্য বিশ্বকাপে পর্তুগালকে হারানোর রেকর্ড রয়েছে মরোক্কোর। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বে পর্তুগালকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল মরোক্কানরা। আর ২০১৮ সালে গ্রুপপর্বের ম্যাচে পর্তুগালের কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল আটলাস লায়ন্সরা। এবারই নকআউট পর্বে প্রথমবার মুখোমুখি হবে দল দুটি।
মাহফুজা ১০-১২