সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে শীত মৌসুমেও থামছে না যমুনার ভাঙন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিনানই থেকে চরসলিমাবাদ ভূতের মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন।
অসময়ে ভাঙনের ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে যমুনা পাড়ের মানুষ।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যমুনা নদীর বিনানই-চর সলিমাবাদ এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে এবং এ সপ্তাহে ভাঙনের তীব্রতা আরও বেড়ে গেছে। অব্যাহত ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকায় রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদরাসা, বাজার, ৫০টি বসতবাড়িসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি।
দুর্গম এ অঞ্চলটি রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী গত এক দশকের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করলেও এখনও দেখা মেলেনি স্থায়ী বাঁধের।
গত এক দশকের বেশি সময় ধরে চৌহালী নদী ভাঙনের কবলে থাকলেও সঠিক পরিকল্পনা না থাকায় গৃহহীন অনেক মানুষই চৌহালী ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী
বিনানই গ্রামের জব্বার আলী, জসিম উদ্দিন, চর সলিমাবাদ গ্রামের ছানোয়ার হোসেনসহ অনেকেই বলেন, পৌষ মাসে নদী ভাঙে এটা আমরা কখনও দেখি নাই। অসময় যমুনার তাণ্ডব শুরু হলেও ভাঙন রোধে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম মোল্লা বলেন, চৌহালির দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ সবসময় নদী ভাঙনের হুমকিতে থাকেন। তবে এ বছর বর্ষা মৌসুমে ভাঙনরোধে বিনাইন এবং চরসলিমাবাদ গ্রামের ৯০০ মিটার এলাকায় জিওব্যাগ ডাম্পিং করে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড। বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর জিওব্যাগ ধ্বসে গিয়ে আবারও নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। অসময়ে নদী ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিল্টন হোসেন বলেন, চৌহালীর নির্বাহী অফিসের কার্যালয় নদী ভাঙনের বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছে। এরপর আমরা সেখানে পরিদর্শন করেছি। ওই অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণে একটি প্রকল্প প্লানিং কমিশনে রয়েছে এবং প্রকল্পটি পাশ হলেই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ শুরু হবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘চৌহালীতে নদী ভাঙনের কথা শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। আমরা বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি এবং বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে।’
সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ইতোমধ্যেই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য নতুন পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।’
মাহফুজা ২০-১