২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৮শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    আজ ৫৬-তে পা রাখলেন ভারতীয় সংগীত কিংবদন্তি এ আর রহমান

    ৫৬-তে পা রাখলেন ভারতীয় সংগীত কিংবদন্তি এ আর রহমান। যার সুরের মূর্ছনায় মুগ্ধ হয় সারাবিশ্ব। পেয়েছেন বিশ্বজোড়া স্বীকৃতি। দুটি অস্কার, একটি বাফটা পুরস্কার, একটি গোল্ডেন গ্লোব, চারটি ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড এবং ১৩ টি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড রয়েছে তার ঝুলিতে।

    ১৯৬৬ সালের ৬ জানুয়ারি মাদ্রাজের (বর্তমান চেন্নাই) এক শৈব হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । জন্মের পর কিন্তু এ এস দিলীপ কুমার নামেই পরিচিত ছিলেন তিনি। ১৯৮৮ সালে যখন রহমানের ২১ বছর বয়স তখন তার বোন কঠিন রোগে আক্রান্ত হন। তখন আবদুল কাদের জিলানি নামের এক মুসলিম পীর তার বোনকে সুস্থ করেন। মুসলিম পীরের দোয়ায় বোনের সুস্থতার পর রহমানের গোটা পরিবার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তারপরই এস দিলীপ কুমার-এর নাম পরিবর্তিত হয়ে রাখা হয় আল্লারাখা রহমান। সংক্ষেপে এ আর রহমান। সাংসারিক জীবনে তার সহধর্মিনীর নাম সায়রা বানু। রহমান-বানু দম্পতির ঘরে রয়েছে তিন সন্তান খাদিজাহ, রহিমা ও আমান। এ আর রহমানের বাবা আর কে শেখর মুধালিয়ার ছিলেন মালায়ালাম মুভির একজন মিউজিক কম্পোজার ও কন্ডাক্টর। তার মায়ের নাম ছিল কস্তুরি (মুসলিম হওয়ার পরে তার নাম হয় করিমা বেগম)।

    ‘রোজা’ ছবির গান থেকে দক্ষিণ থেকে বলিউড, গোটা ইন্ডাস্ট্রিতে ঝড় তোলেন এ আর রহমান। রোজার প্রত্যেকটি গান আজও সমান জনপ্রিয়। এরপর বহু দক্ষিণী ছবি, বহু বলিউড ছবিতে রহমানের সংগীত মন ছুঁয়ে নেয় সংগীতপ্রেমীদের।, সিনেমার গানকে নতুন পথ দেখান রহমান।

    গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমানকে অনেকেই ভালবেসে মোজার্ট অব মাদ্রাজ নামে ডাকেন। তার জীবনের অন্যতম অর্জন আসে ২০০৯ সালে। ওই বছর ৮১তম অস্কার আসরে ড্যানি বয়েলের আলোচিত সিনেমা ‘স্লামডগ মিলিনিয়র’র মিউজিক কম্পোজার হিসেবে সেরা অরিজিনাল মিউজিক স্কোর ও সেরা অরিজিনাল সং ‘জয় হো’র জন্য ডাবল অস্কার জেতেন।

    এই সংগীত কিংবদন্তিকে বিশেষ সম্মান জানাল কানাডা। সেখানকার ওন্টারিওর মরখম অঞ্চলে একটি রাস্তার নাম দেওয়া হলো ‘আল্লারাখা রহমান স্ট্রিট’। এ খবর রহমানের কাছে পৌঁছতেই আবেগে ভাসলেন সংগীত পরিচালক।

    সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন এক আবেগঘন পোস্ট। রহমান তার ইনস্টাগ্রামে পোস্টে লিখলেন, ‘আমি কখনও কল্পনাই করিনি এরকমটা আমার জীবনে ঘটবে। কানাডা সরকার ও মরখমের মেয়রকে ধন্যবাদ। আমার নামের অর্থ হল দয়ালু। যা কিনা সৃষ্টিকর্তার একটি বৈশিষ্ট্য। আমার নামের অর্থকে সঙ্গে নিয়ে কানাডাবাসীর জীবনে শান্তি আসুক, সমৃদ্ধি আসুক এটাই প্রার্থনা করব। সবাই ভাল থাকুন।’

    ২০০৯ সালে টাইম ম্যাগাজিনের জরিপে বিশ্বের সেরা ১০ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের তালিকায় তার নাম স্থান পায়। ২০১০ সালে রাষ্ট্রীয় উপাধি ‘পদ্মভূষণ’ অর্জন করেন। সম্প্রতি ব্রিটেনভিত্তিক একটি ম্যাগাজিন তাকে ‘টুমরোস মিউজিক আইকন’ উপাধি দেয়।

    ২০০২-এ বিশ্ববিখ্যাত কম্পোজার অ্যান্ড্রু লয়েড ওয়েবারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে রিলিজ দেন তার প্রথম স্টেজ প্রডাকশন বোম্বে ড্রিমস। ২০০৭ সালে তাজমহলকে দ্য নিউ সেভেন ওয়ান্ডার্স-এ স্থান পাইয়ে দেয়ার জন্য প্রমোশন হিসেবে ওয়ান লাভ গানটি ৬টি ভাষায় রিলিজ দেন। তার মিউজিক করা উল্লেখ করার মতো হিন্দি মুভিগুলো হলো বোম্বে (১৯৯৫), রঙ্গিলা (১৯৯৫), দিল সে.. (১৯৯৮), তাল (১৯৯৯), লগান (২০০১), সাথিয়া (২০০২), রাঙ্গ দে বাসন্তী (২০০৬), গুরু (২০০৭), যোধা আকবর (২০০৮), জানে তু… ইয়া জানে না (২০০৮), স্লামডগ মিলিয়নেয়ার (২০০৮), ইয়ুভরাজ (২০০৮), গজনি (২০০৮), দিল্লি-৬ (২০০৯) ।

    কম্পোজিশনের পাশাপাশি তিনি একজন অসাধারণ ভোকালিস্টও; হাইপিচ, স্পিরিচুয়ালিটি তার কণ্ঠের অনন্য বৈশিষ্ট্য। এ আর রহমানের কণ্ঠের প্রথম গান মুভি বোম্বের (১৯৯৫) হাম্মা হাম্মা। তবে বন্দে মাতরাম (বন্দে মাতরাম), লুকা ছুপি (রাঙ্গ দে বাসন্তী), তেরে বিনা (গুরু), খাজা মেরে খাজা (যোধা আকবর), ও… সয়া (স্লামডগ মিলিয়নেয়ার), রেহনা তু (দিল্লি-৬) ইত্যাদি ট্র্যাকগুলোকে তার ভোকাল মাস্টার পিস বলা যেতে পারে। তিনিই একমাত্র ইন্ডিয়ান মিউজিশিয়ান, যার অ্যালবাম বিশ্বজুড়ে ২০ কোটি কপির চেয়েও বেশি বিক্রি হয়েছে।

    এ আর রহমানের হাতে এখন অজস্র সিনেমার কাজ। তার হাতে রয়েছে বেশ কিছু হলিউড প্রোজেক্ট।

    মাহফুজা ৬-১

     

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর