শক্তিশালী শীতকালীন তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার এই ঝড় ‘বোম্ব সাইক্লোন’-এ রূপ নেওয়ার পর বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন ১০ লাখের বেশি মানুষ। বন্ধ করে দেওয়া হয় মহাসড়ক, বাতিল হয়েছে হাজার হাজার ফ্লাইট। দেশটিতে শীত এতটাই যে, ফুটন্ত পানি বাতাসে ছুড়ে দিলে সঙ্গে সঙ্গে বরফে পরিণত হচ্ছে।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস জানায়, ভয়ংকর তুষারঝড়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ২০ কোটির বেশি মানুষ সতর্কতার আওতায় রয়েছেন। দেশটির কোথাও কোথাও তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে (-৫৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) পৌঁছেছে।
নর্থ ও সাউথ ডাকোটা, ওকলাহোমা, আইওয়াসহ অন্যান্য স্থানের পরিবহন বিভাগগুলো প্রায় শূন্য দৃশ্যমানতা, বরফে ঢাকা রাস্তা ও তুষারঝড়ের খবর দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের বাড়িতে থাকার জন্য আহ্বান জানান তারা।
নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হচুল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, রাস্তাগুলো আইস স্কেটিং রিংকের মতো হতে চলেছে। এর ওপর গাড়ি চলতে পারবে না।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটঅ্যাওয়ারের হিসাবে, গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রায় পাঁচ হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং আরও ৭ হাজার ৬০০টি বিলম্বিত হয়েছে।
এনডব্লিউএসের গ্লাসগো শাখার প্রধান পূর্বাভাসদাতা রিচ মালিয়াওকো বলেছেন, সেখানে বাতাসের তাপমাত্রা রাতারাতি মাইনাস ৬০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে (মাইনাস ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস প্রায়) নেমে গিয়েছিল। এই আবহাওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
তাপমাত্রা এতটাই নিচে নেমে গেছে, অনাবৃত ত্বক পাঁচ মিনিটেরও কম সময়ে থাকলে ফ্রস্টবাইট বা গরম রক্ত চলাচলের অভাবে টিস্যু জমে গিয়ে ত্বক ফেটে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
এরই মধ্যে শুক্রবার দেশটির মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য সাউথ ডাকোটাতে প্রায় ১০ ফুট তুষার পড়েছে। আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রগুলো জানিয়েছে, এবারের বড়দিন হতে পারে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বরফ আচ্ছাদিত।
মার্কিন জাতীয় আবহাওয়া সেবা জানিয়েছে, দেশের কিছু অংশে চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ মাইনাস ৪৫ থেকে মাইনাস ৭০ ফারেনহাইট পর্যন্ত তাপমাত্রা নেমে যেতে পারে। এরই মধ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে কয়েক রাজ্যে।
অপরদিকে কানাডার অন্টারিওর অধিকাংশ এলাকা এবং কুইবেকের কিছু অংশ ব্যাপক তুষারঝড়ের কবলে পড়েছে। এটি আগামী কয়েক দিন স্থায়ী হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া কেন্দ্র।
মাহফুজা ২৪-১২