কাতার প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছে । শুরুটা যে এতটা খারাপ হবে তা বোধহয় তা ভাবেনি কাতার । বিশ্বকাপ ইতিহাসে স্বাগতিক দেশ হিসেবে ১ম ম্যাচ হেরে যায় তারা । ইকুয়েডরের বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচে ০-২ ব্যবধানে হেরেছে কাতার।
উদ্বোধনী ম্যাচে লাতিন পরাশক্তিদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই পারেনি কাতার। রেফারির বাঁশি বাজার ৫ মিনিট না যেতেই কাতারের জালে ইউকুয়েড্রের গোল। উল্লাসে ভাসে হলুদ শিবির। কিন্তু ইনার ভ্যালেন্সিয়ার এই গোলে উল্লাস বেশিক্ষণ থাকেনি। মিনিটের মধ্যে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি জানায যে এটা অফসাইড! ইকুয়েডর তাতে থেমে যায়ননি । কিন্তু ১ম গোলের দেখা পেতে বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি ইকুয়েডরকে। ম্যাচের ১৬ মিনিটেই দলকে এগিয়ে দেন সেই ভ্যালেন্সিয়া।
ম্যাচের প্রথমার্ধের ১৬ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর ভ্যালেন্সিয়াকে ফাউল করে বসেন কাতারি গোলরক্ষক সাদ আল সায়েব। আর তাতেই রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। স্পট কিক থেকে গোল করে এবারের বিশ্বকাপের ১ম গোলটি করেন ইকুয়েডর। বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথমবারের মত কোন উদ্বোধনী ম্যাচের গোল আসলো পেনাল্টি থেকে।
ম্যাচের ২৯ মিনিটে টরেস এবং ভ্যালেন্সিয়ার যৌথ একটি প্রচেষ্টা রুখে দেন খোকি। এর ঠিক ২ মিনিট পরেই আবারো গোল করেন ভ্যালেন্সিয়া। এবার রাইট উইং থেকে এঞ্জেলিনো প্রেসিয়াডোর ক্রসে হেড থেকে গোল করেন ভ্যালেন্সিয়া। প্রথমার্ধের একদম অন্তিম মুহূর্তে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি মিস করেন কাতারি স্ট্রাইকার আলমোয়েজ আলি। ডি বক্সের ভেতর বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে একা পেয়েও হেড দিয়ে গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি। ম্যাচে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে কাতারি দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই চাপ অব্যাহত রাখে ইকুয়েডর। ৫২ মিনিটে প্রেসিয়াডোর শট গোলবারের সামান্য ওপর দিয়ে চলে যায়। ৫৫ মিনিটে মেন্ডেজের করা শট দুর্দান্ত ভঙ্গিমায় রুখে দেন কাতার গোলরক্ষক আল সায়েব। ৭৫ মিনিটে কাতারের আফিফের ২২ গজ দূর থেকে করা শট গোলবারের সামান্য ওপর দিয়ে চলে না গেলে ১ম গোলের দেখা পেতো দলটি। ম্যাচের শেষ দিকে গোল শোধের প্রচেষ্টা চালালেও স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতায় আর গোল পায়নি কাতার। ফলে ০-২ ব্যবধানের হার নিয়েই বিশ্বকাপ শুরু করে কাতার।
ঝাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে বিশ্বকাপের উদ্বোধনের পর রোববার রাতে হাসিমুখেই মাঠ ছাড়ে লাতিন আমেরিকার দলটি। শুধু তাই নয় কাতারকে ২-০ গোলে হারিয়ে দেশটি বিশ্বকাপের ইতিহাসই বদলে দিয়েছেন। ৯২ বছরের বিশ্বকাপ ইতিহাসে কোনো স্বাগতিক দেশই এর আগে প্রথম ম্যাচে হারেনি ।
স্বাগতিক দেশ হিসেবে হারা ছাড়াও এই ম্যাচটি রেকর্ড গড়েছে আক্রমণের দিক থেকেও। দুই দল পুরো ম্যাচে শট নিয়েছে মাত্র ১১টি। ইকুয়েডর ৬টি আর বাকি ৫টি কাতার।
রেকর্ড গড়েছেন ম্যাচের নায়ক ভ্যালেন্সিয়া এবং ইউকুয়েডরের হয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৫ গোল এখন তার দখলে। শুরুর গোলটি বাতিল না হলে উদ্বোধনী ম্যাচেই পেয়ে যেতেন হ্যাটট্রিক।
পুরো ম্যাচে রেফারি মোট ৬ বার হলুদ কার্ড দেখান দুই দলের খেলোয়াড়দের ।
মাহফুজা ২১-১১
