জসপ্রিত বুমরাহ দুর্দান্ত গতি, সঙ্গে সুইং এর কাছে বেয়ারস্টো, স্টোকস, বাটলার, রুটরা নিজেদের চিরচেনা মাঠেই অসহায়। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে (১৯/৬) ইংল্যান্ডকে ১১০ রানে অলআউট করেছেন ডানহাতি পেসারের জাদুকরী বোলিং এ। বুমরাহর গড়ে দেওয়া জয়ের মঞ্চে শেষ হাসিটা হেসেছে ভারতই। সহজ লক্ষ্য তারা ছুঁয়ে ফেলে ১৮.৪ ওভারে, ১০ উইকেট হাতে রেখে।
উইকেটে ঘাস ছিল তাই টস জিতে বোলিং নিতে রোহিত শর্মাকে দ্বিতীয়বার চিন্তা করতে হয়নি। সুইং এবং সিম বোলিংয়ের জন্য ছিল পারফেক্ট। সঙ্গে একপাশ থেকে বাতাসও বইছিল।
এমন উইকেটে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ভারতের দুই পেসার বুমরাহ ও সামি। দ্বিতীয় ওভারে বুমরাহ জেসন রয়কে বোল্ড ও জো রুটকে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করান। তৃতীয় ওভারে সামির শিকার বেন স্টোকস। তিনজনের কেউই রানের খাতা খুলতে পারেনি। ২০১৮ সালের পর ইংল্যান্ডের প্রথম চার ব্যাটসম্যানের তিনজন শূন্য রানে আউট হন। শেষবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এমন লজ্জা পেয়েছিল তারা।
৭ রান করা জনি বেয়ারস্টোও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। বুমরাহর তৃতীয় ওভারে বেয়ারস্টো পান্তের হাতে ক্যাচ দেন। এবং পরের ওভারে তার শিকার লিভিংস্টোন। ২৬ রান তুলতেই ইংল্যান্ডের নেই ৫ উইকেট। ২৫ বছর আগে ইংল্যান্ডকে এমন দিন দেখতে হয়েছিল। ১৯৯৭ সালে কলম্বোতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৯ রান তুলতে ৫ উইকেট হারিয়েছিল তারা।
শুরুর এই ধাক্কা ইংল্যান্ডের পরবর্তী ব্যাটসম্যানরা সামলে নিতে পারেননি। প্রতি অাক্রমণে জস বাটলার, মঈন আলী রান তুলতে চাইলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। বাটলার ৩০ রানে সামির বলে আউট হন। মঈন আলীকে ১৪ রানে সাজঘরের পথ দেখান প্রসিদ্ধ কৃষ্ঞা। টুকটাক ব্যাটিং পারেন ক্রেইগ ওভারটনও। কিন্তু তাকেও ৮ রানের বেশি করতে দেননি সামি।
এক পর্যায়ে ইংল্যান্ডের রান ছিল ৮ উইকেটে ৬৮। সেখান থেকে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩৫ রানের জুটি গড়েন ডেভিড উইলি ও ব্রেন্ডন চেজ। তাদের ৪১ বলে ৩৫ রানের জুটিতে শতরান পেরিয়ে যায় স্বাগতিকরা। কিন্তু বুমরাহ নিজের দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে ফিরে এ দুই ব্যাটসম্যানকেও দ্রুত আউট করেন। চেজ ১৫ ও উইলি ২১ রান করেন।
১৯ রানে ৬ উইকেট বুহরাহর ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং। এর আগে একবারই ডানহাতি পেসার ৫ উইকেট পেয়েছিলেন। সামি ৩১ রানে পেয়েছেন ৩ উইকেট। অপর উইকেটটি নেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ঞা।
এ নিয়ে ষষ্ঠবার ভারতের পেসাররা প্রতিপক্ষের সব উইকেট নিল। তবে এবারই প্রথমবার অাগে বোলিং করে পেসাররা এমন কীর্তি করলেন। এদিকে ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম ভারতীয় বোলার হিসেবে ৬ উইকেট নিলেন বুমরাহ। সব মিলিয়ে পঞ্চম বোলার হিসেবে বুহরাহ ওয়ানডে ক্রিকেটে ৬ উইকেট পেলেন। এর আগে স্টুয়ার্ট বিনি, অনিল কুম্বলে, আশীষ নেহরা ও কুলদ্বীপ যাদব এলিট ক্লাবে নাম লিখিয়েছিলেন।
লক্ষ্য তাড়ায় ভারতের দুই ওপেনারই খেলা শেষ করে দেন। ইংল্যান্ডের পেসার ও স্পিনাররা কেউ তাদের মনোবলে চিড় ধরাতে পারেননি। রোহিত শর্মা ছিলেন আগ্রাসী। ৪৯ বলে ফিফটি ছোঁয়া রোহিত অপরাজিত থাকেন ৭৬ রানে। ৭ চার ও ৫ ছক্কায় ভারতের অধিনায়ক সাজান ইনিংসটি। শেখর ধাওয়ান ৫৪ বলে করেছেন ৩১ রান। ইংল্যান্ডকে এবারই প্রথম ১০ উইকেটে হারাল ভারত। এর আগে ওভালেই ১৯৮৬ সালে ৯ উইকেটে হারিয়েছিল কপিল দেবের ভারত। সব মিলিয়ে ভারতের এটি পঞ্চম ১০ উইকেটে জয়।