ইউরোপা লিগে নিজেদের মাঠে ফ্রাঙ্কফুর্টের কাছে ৩-২ গোলে হেরে আসর থেকে বিদায় নিতে হলো বার্সেলোনাকে। ন্যু ক্যাম্প, চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার একমাত্র শিরোপা জয়ের বাস্তব সম্ভাবনা টিকে ছিল ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা এই ক্লাব প্রতিযোগিতায়। সেটিও আগেভাগে শেষ হয়ে গেল।
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৫ ম্যাচ পর পরাজয়ের তেতো স্বাদ পেল শাভি এরনান্দেসের দল।
ন্যু ক্যাম্প, বল দখলে যথারীতি বার্সেলোনার আধিপত্য থাকলেও আক্রমণে এগিয়ে ফ্রাঙ্কফুর্ট। মাত্র ২৫ শতাংশ পজেশন রাখতে পারা দলটি গোলের জন্য ১৫টি শট নিয়ে সাতটি লক্ষ্যে রাখে। বিপরীতে, স্বাগতিকদের ১০ শটের চারটি লক্ষ্যে ছিল।
ম্যাচের দুই মিনিটেই এগিয়ে যায় সফরকারীরা। ফিলিপ কস্টিচের পেনাল্টি কিকে এগিয়ে যায় তারা।
কোচ জাভিও এদিন বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন একাদশে, রাইটব্যাকে এনেছিলেন অস্কার মিনগেসাকে, যার ওপর এতদিন তেমন ভরসাই করেননি তিনি। এরপর মাঝমাঠে আগের ম্যাচেই ব্যর্থ হওয়া পেদ্রি গনজালেস ও পাবলো পায়েজ গাভির জুটির ওপর রেখেছিলেন ভরসা, ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংকে বেঞ্চে রেখে। তাতে যা হয়েছে, বার্সার মাঝমাঠে সাঁড়াশি আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসে জার্মান দলটি, পেদ্রি-গাভিরাও ডি ইয়ংয়ের মতো প্রেস নিরোধক হয়ে উঠতে পারেননি। মাঝমাঠের দখলটা হারায় বার্সা। আক্রমণও তাই গড়ে ওঠেনি তেমন।
তার সুযোগ নিয়ে ফ্রাঙ্কফুর্ট প্রতি আক্রমণে উঠেছে বেশ কয়েকবার। ৩৬ মিনিটে তার একটা থেকেই এলো সফলতা। বক্সের বাইরে কস্টিচ পাস বাড়ান রাফায়েল বোরেকে, তার আগুনে এক গোলে ব্যবধান বাড়ায় ফ্রাঙ্কফুর্ট। বিরতির আগে জবাব দিতে পারেনি বার্সা, পারেনি পরের ৪৫ মিনিটেও। মাঝে কস্টিচ পেয়ে গেছেন ব্যক্তিগত দ্বিতীয় আর দলের তৃতীয় গোলটা।
দ্বিতীয়ার্ধে বার্সা সুযোগ পেয়েছে বেশ কয়েকটা, সবচেয়ে বড় সুযোগটা নষ্ট করেন পিয়েরে এমেরিক অবামেয়াং। ফাঁকা জালে বল জড়াতে পারেননি তিনি৷ বার্সাও পায়নি গোলের দেখা। ৮৪ মিনিটে সার্জিও বুসকেটসের কল্যাণে যাও পেলো, অফসাইডের কাটায় হারাল সেটাও।
নয় মিনিট যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে সেই বুসকেটসই পেলেন গোলটা। এরপর অন্তিম সময়ে পেনাল্টি থেকে পেলেন বদলি হিসেবে আসা মেম্ফিস ডিপাইও। তবে ততক্ষণে বেশ দেরিই হয়ে গেছে। সমর্থকদের সেই টিকিট বেচে দেওয়ার ‘অপরাধ’, নিজেদের অন্তত দুটো অমার্জনীয় ভুলে সর্বনাশ যা হওয়ার, তা যে হয়ে গিয়েছিল আগেই!
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায়ঘণ্টা বেজে গিয়েছিল আগেই। ৩-২ গোলে হেরে এবার ইউরোপা লিগ থেকে বিদায়ের লজ্জাটাও হজম করতে হয় বার্সাকে।
লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ১২ পয়েন্টে পিছিয়ে দলটি, বড় অঘটন না ঘটলে মাদ্রিদের ঘরেই উঠবে লিগ শিরোপাটা। কোপা দেল রে থেকে বিদায় আগেই নিয়েছিল বার্সা, এবার ইউরোপা থেকে বিদায়ের ফলে এক মৌসুম বাদে আরও একটা শিরোপাহীনতা চোখ রাঙাচ্ছে কাতালানদের।