৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    আজ ধারণা পাওয়া যাবে কে হচ্ছেন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি

    দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন সে বিষয়ে আজই ধারণা পাওয়া যাবে। আওয়ামী লীগের সংসদীয় সভায় আজ রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন চূড়ান্ত হতে পারে। জাতীয় সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীই হবেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি।

    সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সভাকক্ষে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক হবে। রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে সংসদীয় দলের বৈঠক হবে।

    সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপতি হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

    এখন পর্যন্ত বঙ্গবভবনের বাসিন্দা হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান ও জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তবে রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে মসিউর রহমান। সংসদ সচিবালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

    আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলী ও সংসদীয় দলের একজন সদস্য বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতেই সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সপ্তম সংসদীয় দলের সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সেক্রেটারি ও জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী দলীয় এমপিদের যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।

    ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার বিধান রয়েছে সংবিধানে। রাষ্ট্রপতি সরাসরি ভোটে নয়, সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হন। তফসিল ঘোষণাসহ এ নির্বাচন পরিচালনা করে নির্বাচন কমিশন। সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের মনোনীত প্রার্থীই হবেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি।

    বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সালের ২৭ নম্বর আইন)-এর ৫ ধারা অনুসারে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। চলতি জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পর চূড়ান্ত করতে হবে রাষ্ট্রপতির নাম।

    ক্ষমতাসীন দলটি যাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে, তিনিই হবেন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি।

    আগামী ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হবে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির পদে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। পরের দিন ১৩ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। একাধিক প্রার্থী থাকলে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে ভোট গ্রহণ হবে। সংসদ সদস্যরা ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন।

    সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচনের জন্য প্রার্থীকে ভোট দেবেন। আর রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থীর সমর্থক ও প্রস্তাবক হতে হয় সংসদ সদস্যদের। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি প্রার্থী দেবেন না বলে এরইমধ্যে জানিয়েছে। আর সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই নির্বাচিত হবেন। তাই মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার পাশাপাশি প্রস্তাবক ও সমর্থক কারা হবেন, সেটাও চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।

    প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এই নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। সংসদ সদস্যরাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটার। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নির্বাচনী কর্মকর্তার সামনে নির্ধারিত ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর নাম ও নিজের স্বাক্ষর দিয়ে তা জমা দিতে হবে। এর মুড়ি অংশে স্বাক্ষর দিয়ে ভোটারদের ব্যালট পেপার সংগ্রহ করতে হবে। ভোট দেওয়ার পর সংসদকক্ষে স্থাপিত এক বা একাধিক ব্যাটল বাক্সে তা জমা দিতে হবে। প্রত্যেক সংসদ সদস্যের একটি মাত্র ভোট থাকবে। সংসদ সদস্য হিসেবে স্পিকারও এ নির্বাচনে ভোটার। ভোটের দিন গ্যালারিসহ সংসদকক্ষে প্রার্থী, ভোটার, ভোট নেওয়ায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করবেন নির্বাচনি কর্মকর্তা। ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ভোট গণনা করবেন। সর্বাধিকসংখ্যক ভোটপ্রাপ্তকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে।

    এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে কাকে দলীয় সমর্থন দেওয়া হবে, এ নিয়ে দলের ফোরামে এখনো আলোচনা হয়নি।

    এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্ন বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী না থাকলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দেবে জাতীয় পার্টি। অবশ্য এর আগে দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে। রাষ্ট্রপতি হিসেবে একজন পরীক্ষিত রাজনীতিককে চাই।

    এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগ সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকেই রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দিবে।

    উল্লেখ্য, আবদুল হামিদ ১০ বছর ধরে রাষ্ট্রপতির পদে থাকা ছাড়াও দুই দফায় স্পিকার ছিলেন। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

    মাহফুজা ৭-২

     

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর