২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার দেশের প্রথম পাতাল রেল নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করবেন

    বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসা মেট্রোরেল পথ এবার মাটির নিচ দিয়ে নির্মাণ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার এই নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এই পাতাল মেট্রোরেল পথ নির্মিত হবে। এটিই মেট্রোরেলের প্রথম পাতাল যাত্রা।

    মঙ্গলবার রাজধানীর রমনায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক।

    তিনি বলেন, ‘আগামী ২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প, নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের রাজউক কমার্শিয়াল প্লট মাঠে পাতাল রেল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন, ফলক উন্মোচন করবেন। এ সময় একটি সুধী সমাবেশও অনুষ্ঠিত হবে।’

    পাতাল রেল হচ্ছে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি-১) প্রকল্পের আওতায় এবং এটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

    ডিএমটিসিএল নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জে মেট্রোরেলের ডিপো নির্মাণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে । এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এরমধ্যে জাপানি ঋণ ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। আর বাকি অর্থ সরকারি তহবিল থেকে মেটানো হবে।

    পাতাল রেলের নির্মাণ কাজের জন্য এরই মধ্যে ৯২ দশমিক ৯৭২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘২০২৬ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।’

    পাতাল রেল নির্মাণের সময় আশপাশের ভবনগুলোর কোনও সমস্যা হবে না বলে জানান এম এ এন সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘টিভিএম নামে এক রোবট মেশিনের মাধ্যমে মাটি খোঁড়া হবে, যা শব্দহীন। এছাড়া পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকবে পাতাল রেলস্টেশনে। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর আটটি কোচ দিয়ে আড়াই মিনিট পরপর এক একটি ট্রেন এসে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়াবে। সে হিসেবে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে।’

    প্রকল্প সূত্র জানায়, দ্বিতীয় মেট্রোরেল হবে উড়াল ও পাতাল পথের সমন্বয়ে। দুটি রুটে ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-১ নির্মাণ হবে। এর মধ্যে উত্তরা ও বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত- এই রুটে মাটির নিচ দিয়ে চলবে মেট্রোরেল। এটি ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার দীর্ঘ।

    এই রুটে স্টেশন হবে মোট ১২টি। এগুলো হলো- বিমানবন্দর, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩, খিলক্ষেত, যমুনা ফিউচার পার্ক, নতুন বাজার, উত্তর বাড্ডা, বাড্ডা, হাতিরঝিল, রামপুরা, মালিবাগ, রাজারবাগ ও কমলাপুর।

    আর পূর্বাচল রুটে নতুন বাজার স্টেশনটি হবে পাতালে। এরপর নতুন বাজার থেকে পূর্বাচলের নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জ পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়ালপথে। এ রুটে আবার স্টেশন হবে নয়টি।

    এগুলো হলো- নতুন বাজার, যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা, পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটি, মাস্তুল, পূর্বাচল পশ্চিম, পূর্বাচল সেন্টার, পূর্বাচল পূর্ব, পূর্বাচল টার্মিনাল ও পিতলগঞ্জ ডিপো।

    প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, নতুন বাজার স্টেশনে এমআরটি লাইন-৫ (নর্দান রুট)সহ আন্তঃপরিবর্তন করার সুবিধা থাকবে। যেখান থেকে যাত্রীরা  নেমে পূর্বাচল বা পূর্বাচল রুট থেকে বিমানবন্দর রুটে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।

    প্রকল্পের বিস্তারিত বিবরণে বলা হয়, এমআরটি লাইন-১ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর যেতে ২৪ মিনিট সময় নেবে। ১২টি পাতাল  স্টেশনে বিরতি ও সাতটি উড়াল স্টেশনে বিরতিসহ নতুন বাজার  থেকে পূর্বাচল যেতে ২০ মিনিট সময় লাগবে।

    এমআরটি লাইন-১ পাতাল স্টেশন চার তলা বিশিষ্ট হবে। টিকিট কাউন্টার এবং অন্যান্য সুবিধাদি প্রথম বেসমেন্ট লেভেলে থাকবে। প্ল্যাটফর্মটি হবে দ্বিতীয় তালায়। উড়াল স্টেশনের টিকিট কাউন্টার ও প্ল্যাটফর্ম হবে চতুর্থ তলায়। উড়াল ও পাতাল উভয় স্টেশনেই লিফট, সিঁড়ি এবং এসকেলেটর থাকবে।

    প্রকল্পটির জন্য ডিএমটিসিএল জাপানের টোকিও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড  ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। প্রকল্পটি ১২টি প্যাকেজের আওতায় বাস্তবায়িত হবে।

    এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এটি নির্মাণ হলে ২০২৬ সাল থেকে দৈনিক আট লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে।

    মাহফুজা ৩১-১

     

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর