ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে রুশ হামলা জোরদার করায় সেখান থেকে পালিয়ে যেতে শুরু করেছে বেসামরিক নাগরিকরা। সবচেয়ে বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে খেরসন অঞ্চলে।
বুধবার সকালের এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ বলেছে, রাশিয়ার বাহিনী মর্টার ও আর্টিলারি দিয়ে খেরসনের কাছে ডিনিপ্রো নদীর ডান তীরে জনবহুল এলাকায় আক্রমণ করছে। খবরটি জানায় রয়টার্স ও বিবিসি।
অন্যদিকে রাশিয়া বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করার কথা অস্বীকার করেছে। রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেদনগুলো যাচাই করতে পারেনি।
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর বিবৃতি বলা হয়, রাশিয়ার গোলাবর্ষণের ফলে অবকাঠামোর ক্ষতির মধ্যেই খেরসন এবং এর আশেপাশের এলাকা ছেড়ে যেতে চায় এমন লোকদের সরিয়ে নিচ্ছে ইউক্রেন।
ইউক্রেনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমিন জেপার বুধবার সকালে টুইট করেছেন, রুশ বোমা হামলায় খেরসনের প্রসূতি হাসপাতালে হামলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, হামলার ঠিক আগে একটি শিশুর জন্ম হয়েছিল।
বেলারুশের ভূমি ব্যবহার করে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাশিয়া আবারও হামলা চালাতে পারে বলে আগে থেকেই আশঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। কারণ রাশিয়া আগেই ঘোষণা দিয়েছিল বেলারুশে ইস্কানদার ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা এবং এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েন করা হবে।
পারমাণবিক বোমা ও ড্রোন বহনে সক্ষম ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরের লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে। বেলারুশের রাজধানী মিনস্ক থেকে ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় সহজেই আঘাত হানতে পারবে এসব ক্ষেপণাস্ত্র।
খেরসনের ট্রেন স্টেশনে দেখা গেছে, ১৩ বছর বয়সী নিকা সেলিবানোভা দুই হাত জাগিয়ে বিমর্ষচিত্তে তার বন্ধুকে বিদায় জানাচ্ছে। নিকার পরিবার খেরসন ছেড়ে চলে যাচ্ছে, তবে শেষ পর্যন্ত কোথায় যাবে তা নিশ্চিত নয়। আপাতত তারা পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর খমেলনিটস্কির দিকে যাচ্ছে। সেখানে কিছু সাহায্য পাবে এই আশায়। নিকার মা এলিনা বলেন, আগের রাশিয়ান বাহিনী দিনে সাত থেকে ১০ বার হামলা চলাতো। কিন্তু এখন ৭০ থেকে ৮০ বার হামলা চালানো হচ্ছে। তাই সারা দিনই আতঙ্কের মধ্যে কাটে। আমি ইউক্রেন ও আমার প্রিয় শহরকে ভালোবাসি। কিন্তু আমাদের এই শহর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছি।
বড়দিনের পর থেকে কয়েক শতাধিক নাগরিক খেরসন ছেড়েছেন।
ইউক্রেন সরকার সেখানে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে খোলামেলা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এমন বক্তব্যের একদিন পর রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, ইউক্রেনকে মস্কোর সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে নতুবা রাশিয়ার সেনাবাহিনী সিদ্ধান্ত নেবে।
মাহফুজা ২৮-১২