রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা ধর্মঘটে রাজশাহীর সঙ্গে অন্য জেলাগুলোর বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
রাজশাহী পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়েছে। তবে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও সিএনজি অটোরিকশা চলছে।
আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে (হাজী মুহম্মদ মুহসীন উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে) বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ রয়েছে। আট শর্তে তাদের সেখানে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ধর্মঘটের জন্য বুধবার অনেক নেতাকর্মী রাজশাহী এসে পৌঁছান। ।
বিএনপির নেতারা জানায় , এই পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে মালিক-শ্রমিকের কোন সম্পৃক্ততা নেই। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার জানান, ‘সমাবেশে নেতাকর্মীরা যাতে আসতে না পারে সে জন্য পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে’।
যদিও তা অস্বীকার করেন রাজশাহী জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক ।
সকালে রাজশাহীর নওদাপাড়ায় আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, কোন বাস ছেড়ে যায়নি। তবে ধর্মঘটের ব্যাপারে আগে থেকেই সাধারণ মানুষ জানেন বলে দুই টার্মিনালে যাত্রীদের কোন চাপ দেখা যায়নি। শিরোইলের দূরপাল্লার বাসের কাউন্টারগুলো বন্ধ আছে।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে অন্যদিনের তুলনায় যাত্রীর চাপ কিছুটা দেখা গেছে। স্টেশনে ট্রেনের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষাও দেখা গেছে।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক আবদুল করিম বলেন, কাউন্টার এবং অনলাইনে চার তারিখ পর্যন্ত ট্রেনের টিকিট ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্রি হয়ে গেছে। সব রুটে সময়মতো ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
শনিবার রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদের যৌথসভা নাটোরে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ১০ দফা দাবি জানানো হয়। ৩০ নভেম্বর দুপুর পর্যন্ত এ দাবিগুলোর প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সাড়া না পাওয়ায় এমন কর্মসূচি দিয়েছেন রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
১০ দফা দাবি হলো
১। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধন করতে হবে।
২। হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়ক বা আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রি-হুইলার (নছিমন, করিমন, ভটভটি, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ইত্যাদি) চলাচল বন্ধ করতে হবে।
৩। জ্বালানি তেল ও যন্ত্রাংশের মূল্য হ্রাস করতে হবে।
৪। করোনাকালে গাড়ি চলাচল না করায় সে সময়ে ট্যাক্স মওকুফ করতে হবে।
৫। সব ধরনের সরকারি পাওনাদির (ট্যাক্স-টোকেন, ফিটনেস) অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বন্ধ করতে হবে।
৬। চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স-সংক্রান্ত নানাবিধ জটিলতা নিরসন করতে হবে।
৭। পরিবহনের যাবতীয় কাগজ হালনাগাদ বা সঠিক থাকার পরও নানাবিধ পুলিশি হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
৮। উপজেলা পর্যায়ে বিআরটিসি চলাচল দ্রুত বন্ধ করতে হবে।
৯। মহাসড়কে হাট-বাজার আয়োজন বা পরিচালনা করা যাবে না এবং চলমান হাটবাজার অতি দ্রুত উচ্ছেদ করতে হবে।
১০। যাত্রী ওঠানামার জন্য পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে এবং প্রত্যেক জেলায় ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ ও ট্রাক ওভারলোড বন্ধ করতে হবে।
মাহফুজা ১-১২