২৫শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১০ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৭ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি

    বিএনপিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি । তবে, এ ক্ষেত্রে ২৬টি শর্ত আরোপ করা হয়।

    মঙ্গলবার  বিকেলে ডিএমপি কমিশনারের পক্ষে উপ-কমিশনার (সদর দপ্তর ও প্রশাসন) আব্দুল মোমেন স্বাক্ষরিত অনুমতিপত্র বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

    তবে বিএনপি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণসমাবেশ করতে অনড়। এজন্য গত ২০ নভেম্বর ডিএমপির কাছে আবেদনও করে তারা।

    ডিএমপি থেকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বরাবর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া প্রসঙ্গে ২০ নভেম্বর দাখিল করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিপরীতে গণসমাবেশ করলে যানজট ও নাগরিক দুর্ভোগ সৃষ্টি হবে। বিধায় ওই স্থানের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিম্নবর্ণিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন সাপেক্ষে আগামী ১০ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হলো।’

    পুলিশের আরোপিত শর্তগুলো হলো—

    ১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।

    ২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রের শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

    ৩. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

    ৪. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।

    ৫. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের ভেতরে ও বাইরে উন্নত রেজুলেশনের সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।

    ৬. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশ গেটে আর্চওয়ে স্থাপন করতে হবে এবং সমাবেশস্থলে আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

    ৭. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভেহিকল স্ক্যানারের মাধ্যমে সমাবেস্থলে আসা সব যানবাহন তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে।

    ৮. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে।

    ৯. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে ও আশপাশে মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

    ১০. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।

    ১১. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না।

    ১২. আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

    ১৩. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।

    ১৪. অনুমতি দেওয়া সময়ের মধ্যে সমাবেশের কার্যক্রম শেষ করতে হবে।

    ১৫. সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।

    ১৬. সমাবেশস্থলের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থাতে সমবেত হওয়াসহ যান ও মানুষ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা করা যাবে না।

    ১৭. পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন-বহনের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠি, রড ব্যবহার করা যাবে না।

    ১৮. আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কার্যকলাপ করা যাবে না।

    ১৯. রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য দেওয়া যাবে না।

    ২০. উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।

    ২১. মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না।

    ২২. নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং করতে হবে, মূল সড়কে কোনো পার্কিং করা যাবে না।

    ২৩. সমাবেশস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।

    ২৪. স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে সমাবেশ করতে হবে।

    ২৫. উল্লিখিত শর্তাবলী পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।

    ২৬. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ছাড়া এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।

    ১৫ নভেম্বর বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে দেখা করে এবং ১০ ডিসেম্বর দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি চায়। ডিএমপি কমিশনার অবশ্য বিএনপিকে অন্য ভেন্যুর নাম দিতে বলেন।

    নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানাতে এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে  ২৭ সেপ্টেম্বর বিএনপি ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক সমাবেশের ঘোষণা দেয়।

    বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা করে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর, সিলেট ও কুমিল্লায় সমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি।

    বিএনপি দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছে যে আগামী জাতীয় নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। কিন্তু সংবিধানে সে সুযোগ না থাকার বিষয় উল্লেখ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দাবিটি তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

    আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীতে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে বিএনপি।

    মাহফুজা২৯-১১

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর