পঞ্চগড়ে করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে বেড়ে ৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে ।
সোমবার সকালে উপজেলার আওলিয়াঘাট থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে দেবীগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে একজন পুরুষ, এক শিশু ও একজন নারী। তবে তাৎক্ষণিক তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী উপ-পরিচালক শেখ মাহাবুবুল আলম জানান, সকাল থেকে পঞ্চগড়সহ আশপাশের জেলার ফায়ার সার্ভিসের আট ইউনিট চালাচ্ছেন উদ্ধার অভিযান । রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী থেকে আসা তিনটি দলের ৯ ডুবুরি উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন । এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।
এদিকে নিহত ৩৯ জনের পরিচয় নিশ্চিতের তালিকা প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসনের জরুরি তথ্য কেন্দ্র।
তালিকা অনুযায়ী মারা যাওয়ারা হলেন- হাশেম আলী (৭০), শ্যামলী রানি (১৪), লক্ষী রানি (২৫), অমল চন্দ্র (৩৫), শোভা রানি (২৭), দিপঙ্কর (৩), পিয়ন্ত (২), রুপালি ওরোফে খুকি রানি (৩৫), প্রমিলা রানি (৫৫), ধনবালা (৬০), সুনিতা রানি (৬০), ফাল্গুনী (৪৫) প্রমিলা দেবী, জ্যোতিশ চন্দ্র (৫৫), তারা রানি (২৫), সানেকা রানি (৬০), সফলতা রানি (৪০), বিলাশ চন্দ্র (৪৫), শ্যামলী রানি ওরফে শিমুলি (৩৫), উশোশি (৮) তনুশ্রী (৫), শ্রেয়সী, প্রিয়ন্তী (৮), সনেকা রানী (৬০), ব্রজেন্দ্র নাথ (৫৫), ঝর্ণা রানী (৪৫), দীপ বাবু (১০), সূচিত্রা (২২), কবিতা রানী (৫০), বেজ্যে বালা (৫০), দিপশিখা রানী (১০), সুব্রত (২), জগদীশ (৩৫), যতি মিম্রয় (১৫), গেন্দা রানী, কনিকা রানী, সূমিত্রা রানী, আদুরী (৫০) এবং পূষ্পা রানী। তাদের সবার বাড়ি পঞ্চগড়েই।
জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায় বলেন, এ পর্যন্ত ৩৯ টি মরদেহ উদ্ধার করা হয় । উদ্ধার হওয়া মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাট এলাকায় ঘটে এ নৌকাডুবির ঘটনা। খবর পেয়ে পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য ও রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
রোববার সন্ধ্যায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় স্থাপন করা হয় জরুরি তথ্যকেন্দ্র । ৬নং মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, রোববার দুপুরে মহালয়া উপলক্ষে বোদা, পাঁচপীর, মাড়েয়া, ব্যাঙহারি নৌকায় করে বদেশ্বরী মন্দিরে যাচ্ছিলেন এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। মাঝ নদীতে পৌঁছার পর যাত্রীর চাপে উল্টে যায় নৌকাটির একপাশ। দুর্ঘটনার পর কেউ কেউ সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও বেশিরভাগ যাত্রী এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোলেমান আলী জানান, , মরদেহ শনাক্তের প্রক্রিয়া চলছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে।
মাহফুজা ২৬-৯