বাংলাদেশ-ইরানের যৌথ প্রযোজনায় ঈদুল আজহায় মুক্তি পেয়েছে ‘দিন: দ্য ডে’ সিনেমা। অনন্ত জলিল সিনেমাটির বাজেট শত কোটি টাকা বলে প্রচার করেন ।
গেল ২২ আগস্ট ‘দিন: দ্য ডে’ সিনেমার পরিচালক ও প্রযোজক মোর্তেজা অতাশ জমজম ইনস্টাগ্রামে প্রকাশ করেন সিনেমাটির বাজেটের চুক্তিপত্রসহ কিছু কাগজ । তিনি দাবি করেন সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে মাত্র চার কোটি টাকায়।
এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।
অবশেষে অনন্ত জলিল মোর্তেজা অতাশ জমজমের দাবির বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন। শনিবার ২৭ আগস্ট সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তা শেয়ার করেন তিনি ।
ভিডিওবার্তায় ইরানি পরিচালকের দাবি অস্বীকার করেন অনন্ত জলিল। তিনি বলেন, ‘সিনেমাটির শুটিং শুরু হয় ২০১৯ সালে এবং শেষ হয় ২০২০ সালে। মুভি রিলিজের আগমুহূর্ত পর্যন্ত ও রিলিজের পরে ইন্টারভিউতেকখনও কি বলেছি- এ মুভিটির ইনভেস্টার শুধুই আমি? সবসময় বলেছি আমি শুধুমাত্র বাংলাদেশের শুটিংয়ের ইনভেস্টার ।’
২০২১ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি লা-মেরিডিয়ান হোটেলে ‘দিন: দ্য ডে’ ও ‘নেত্রী দ্য লিডার’ মুভির একটি অনুষ্ঠান হয়। সেই অনুষ্ঠানে মিস্টার মোর্তেজা, ইরানের অভিনেতারা উপস্থিত ছিলেন। সেসময় মোর্তেজা আমাকে বলেন, শুটিংয়ের জন্য তিনি যে বাজেট নির্ধারণ করেছিলেন, তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ শুটিংয়ে খরচ করেন। মোর্তেজার বলা অ্যামাউন্টটাই অনুষ্ঠানে আমি বলি।
অনন্ত জলিল বলেন, ‘মোর্তেজা তুলে ধরেছেন, আমার ৪-৫ লাখ ডলার তাকে শুটিং খরচের জন্য দেয়ার কথা এবং অ্যাগ্রিমেন্ট অনুযায়ী সম্পূর্ণ টাকা আমি দেইনি। অ্যাগ্রিমেন্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের শুটিংয়ে সব খরচ আমার দেওয়ার কথা এবং সেখানে এক কোটি টাকা লাগলো বা চার কোটি টাকা লাগলো সেটা তো মোর্তেজার দেখার বিষয় না।’
‘বাংলাদেশের শুটিং খরচ ছাড়া বিদেশের কোনো শুটিং খরচই আমার দেয়ার কথা না। আমাদের ট্রাভেলিং কস্ট ছাড়া, এয়ার টিকিট ছাড়া সেখানে আমি তাকে ডলার দেবো এটার প্রশ্ন উঠবেই বা কেন? তাহলে মোর্তেজা এতগুলো দেশে যে শুটিং করলো, তাতে তো তার কোনো টাকাই খরচ হয়নি। তাহলে তিনি কীভাবে বলেন তার পোস্টে যে, আমি তাকে অ্যাগ্রিমেন্ট (চুক্তি) অনুযায়ী টাকা দেয়নি। আপনারা তো ফলাও করে প্রচার করছেন মুভির বাজেট চার কোটি। তাহলে তো মোর্তেজার শুটিংয়ে কোনো টাকাই খরচ করেননি বলেন অনন্ত।
আমরা যখন বিদেশে শুটিংয়ে যাই, তখন মোর্তেজা আমাদের অনেক সম্মান দিয়ে রেখেছেন ফাইভ স্টার হোটেলে । আমাদের ফুল টিমকে তার বাসায়ও দুদিন দাওয়াত দিয়েছেন। আমি ঠিকভাবে ইরানের ১৭ জনের টিমকে সোনারগাঁও হোটেলে রেখেছি ১৮ দিন। তাদের ফুল টিমকে অনুরূপ সম্মান আমরাও দিয়েছি। + মোর্তেজার সঙ্গে আমার কখনো কোনো মতভেদ বা খারাপ সর্ম্পক হয়নি। কে বা কারা নিজ স্বার্থের জন্য মোর্তেজার সঙ্গে আমার এ দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করেছেন, যেটা তারাই ভালো জানেন এবং মিস্টার মোর্তেজাই বলতে পারবেন।’
অনন্ত জলিল জানান ‘দিন: দ্য ডে’ মুভির সম্পূর্ণ ফুটেজ মোর্তেজার কাছেই ছিল। তিনি নিজেই ডলবি মিক্সিং করানোর জন্য সাউথ ইন্ডিয়াতে মুভিটি নিয়ে আসেন । ইরানে ডলবি সার্টিফিকেট দেওয়ার কোনো রাইটস নেই। মোর্তেজার সঙ্গে আমার যদি কোনো ধরনের লেনদেনের সমস্যা থাকতো, তাহলে মোর্তেজা কখনো মুভিটা সাউথ ইন্ডিয়াতে এনে আমাকে দিতো না।’
ইরানে মুভি রিলিজে সময় ডলবি সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয় না এবং তাদের পোস্ট প্রোডাকশন এমনিতেই বেশ উন্নত। আমার মোর্তেজার সঙ্গে কখনই কোনো খারাপ সম্পর্ক ছিল না এবং আমি আশা করি, আগামীতেও থাকবে না। যাদের স্বার্থের জন্য তিনি এটা করেছেন, তাদের মুখোশ একদিন মিস্টার মোর্তেজাই প্রকাশ করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি বলে জানান অনন্ত জলিল ।
মাহফুজা ২৭