আজ দেশীয় চলচ্চিত্রের ‘মহানায়ক’ বুলবুল আহমেদের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১০ সালের এই দিনে তিনি পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।
১৯৪১ সালে পুরান ঢাকায় বুলবুল আহমেদের জন্ম । তার আসল নাম তাবারক আহমেদ। আদর করে তার বাবা-মা ডাকতেন বুলবুল বলে। দাম্পত্য জীবনে বুলবুল আহমেদের স্ত্রী ডেইজি আহমেদ। এই দম্পতির তিন সন্তান হলেন- মেয়ে ঐন্দ্রিলা ও তিলোত্তমা এবং ছেলে শুভ।
বুলবুল পড়াশোনা করেছেন ঢাকার কলেজিয়েট স্কুল, নটর ডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়াশোনা শেষ করার পর তৎকালীন ইউবিএল ব্যাংক টিএসসি শাখার ম্যানেজার হিসেবে শুরু করেন তিনি চাকরিজীবন।
চাকরির পাশাপাশি বুলবুল আহমেদ টিভিতে অভিনয় শুরু করেন। আবদুল্লাহ আল মামুনের পরিচালনায় ‘বরফ গলা নদী বুলবুল আহমেদ অভিনীত প্রথম টিভি নাটক ছিল। এটি প্রচারিত হয়। ১৯৬৪ সালে বিটিভিতে। বুলবুল আহমেদ অভিনীত উল্লেখযোগ্য টিভি নাটকগুলো হচ্ছে- মালঞ্চ, ইডিয়েট, মাল্যদান, বড়দিদি, আরেক ফাল্গুন, শেষ বিকেলের মেয়ে। ধারাবাহিক ও খণ্ড নাটক মিলিয়ে প্রায় চারশ নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন।
১৯৭৩ সালে আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমামের ‘ইয়ে করে বিয়ে’র মাধ্যমে প্রথম সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন। এর পরের বছর আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘অঙ্গীকার’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। তবে বুলবুল আহমেদ ঢাকাই ছবির দর্শকের কাছে চিরদিন শ্রদ্ধেয় হয়ে আছেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি দুই চরিত্র ‘শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’- এ অভিনয় করে। ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’-এই দুটি চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি জায়গা করে নেন সব শ্রেণির দর্শকের অন্তরে।
এছাড়াও ‘মহানায়ক’, ‘সীমানা পেরিয়ে’, ‘সূর্যকন্যা’, ছবিতে বুলবুল আহমেদ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন অনন্য উচ্চতায়। বুলবুল আহমেদ অভিনীত উল্লেখযোগ্য অন্যান্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- ধীরে বহে মেঘনা, জীবন নিয়ে জুয়া, রূপালী সৈকতে, বধূ বিদায়, জন্ম থেকে জ্বলছি, দি ফাদার প্রভৃতি।
বুলবুল আহমেদ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেন। তিনি ওয়াদা, মহানায়ক, ভালো মানুষ, রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত, আকর্ষণ, গরম হাওয়া, কত যে আপন সিনেমার সফল নির্মাতা ছিলেন।
বুলবুল আহমেদ অভিনীত সর্বশেষ সিনেমা ছিল ‘দুই নয়নের আলো’। তার অভিনীত সর্বশেষ টিভি নাটক ছিল ২০০৯ সালে ‘বাবার বাড়ি’।
ঢাকাই ছবির নন্দিত অভিনেতা বুলবুল আহমেদের মৃত্যু দিবসে তার আত্মার শান্তি কামনায় শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছে তার ভক্তরা। যতদিন এদেশের চলচ্চিত্র থাকবে ততদিন তিনি ‘হয়ে থাকবেন মহানায়ক’।
মাহফুজা ১৫-৪