মাতৃভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পূর্ণ হবে আগামীকাল । পুরো জাতি একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহর থেকে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবে ।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস পালনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। কদিন ধরেই পুলিশসহ সব ধরনের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরা এসে শহীদ মিনার পরিদর্শন করে যাচ্ছেন।
দিবসটিকে সামনে রেখে বেশ কয়েকদিন ধরে শহীদ মিনার ধোয়া-মোছাসহ আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। শহিদ মিনারকে সাজানো হয়েছে চেতনার সাজে এবং আশপাশের দেয়ালগুলোতে রং-তুলির আঁচড়ে আঁকা হচ্ছে শহিদের প্রতিচ্ছবি। দেয়ালে দেয়ালে বাংলা বর্ণ ও শহিদ মিনারের বেদিতে আঁকা হচ্ছে আলপনা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছাদে ঘোষণা মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ প্রাঙ্গণে পুলিশ, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কন্ট্রোলরুম, ফায়ার সার্ভিস ও প্রাথমিক চিকিৎসা ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের চারদিকে বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি করা হয়েছে সীমানা প্রাচীর। মূলবেদিতে করা হয়েছে চুনকাম এবং শহিদ মিনারে লাগানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন লাল গোলাকার বৃত্ত। শহিদ মিনারের পূর্ব দিকে পুলিশ কন্ট্রোল রুম।
শহিদ মিনারের এই সাজসজ্জার কাজ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
শহিদ মিনার এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরেছেন। সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি আজ থেকেই লক্ষ্য করা গেছে। দুই দিন ধরে দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি ছাড়া কাউকে শহিদ মিনার এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
একুশে ফেব্রুয়ারি ঘিরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, রাত ১২টার পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রথমে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন। তারা বিদায় নেওয়ার পর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
এদিকে, দিবসটি ঘিরে সাইবার নজরদারি থাকবে বলে জানিয়েছেন র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন। তবে যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারসহ সারাদেশের নিরাপত্তা ও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রক্টরিয়াল টিম টহল দেবে। তাছাড়া ঢাবির বিএনসিসি ও স্কাউটের স্বেচ্ছাসেবকরা থাকবেন। পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় থাকবে।
রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিভিন্ন স্থানে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতি একুশের মহান শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।
শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন।
একুশে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটি। এদিন দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সঠিক নিয়মে, সঠিক রং ও মাপে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।
আজিমপুর কবরস্থানে ফাতেহা পাঠ ও কোরানখানির আয়োজনসহ দেশের সব উপাসনালয়ে ভাষাশহিদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
সংবাদপত্রসমূহে ক্রোড়পত্র প্রকাশসহ বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো একুশের বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।
মাহফুজা ২০-২