১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    খুলনায় অপহরণের পর স্কুলছাত্র খুন, আটক ৫ ছাত্র

    খুলনায় অপহরণের পর গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র নীরব মণ্ডলকে  হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ একই স্কুলের পাঁচ ছাত্রকে আটক করেছে। ভারতীয় ক্রাইম পেট্রোল সিরিয়াল দেখে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে তারা এই অপহরণের পরিকল্পনা করে বলে জানায় পুলিশ।

    উপজেলার গুটুদিয়া এসিজিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

    নিহত নীরব খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া পূর্বপাড়া এলাকার পান-সুপারি ব্যবসায়ী শেখর মণ্ডলের ছেলে।

    আটকরা হচ্ছে- গুটুদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র সোহেল মোল্লা , হীরক রায় ও পিতু মণ্ডল , দশম শ্রেণির ছাত্র পিয়াল রায়  ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র দ্বীপ মণ্ডল । এর মধ্যে পিয়ালের বাড়ি ডুমুরিয়ার ভান্ডারপাড়া তেলিগাতি এলাকায় এবং অন্য চারজনের বাড়ি গুটুদিয়া এলাকায়।

    ওসি শেখ কনি মিয়া বলেন, নীরব মণ্ডল গুটুদিয়া এসিজিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বৃহস্পতিবার  স্কুল ছুটির পর পিয়াল নামে একটি ছেলে নীরবকে ডেকে নিয়ে যায়। স্কুলের পেছনে পরিত্যাক্ত একটি ভবনে মধ্যে অবস্থান করছিল মিতু, সোহেল এবং দ্বীপ। নীরবকে সেখানে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা তার পা ধরে মুখ বন্ধ করতে চায়। এছাড়া রশি ঝুলিয়ে রেখেছিল দ্বীপ। আটকদের ভাষ্য অনুযায়ী- তাদের পরিকল্পনা ছিল অজ্ঞান করে তার বাবার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার। কিন্তু তারা প্রথমেই তাকে ঝুলিয়ে মেরে ফেলে। ২-৩ জন রশি টেনে ধরে রাখে, নীরব সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়।

    ওসি কনি মিয়া বলেন, আটককৃতরা ক্রাইম পেট্রোলের একটি পর্ব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়। সেই প্ল্যান অনুযায়ী কার কি ভূমিকা থাকবে, সেই  অনুযায়ী তারা ভূমিকা নিয়েছে। তারা এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তারা ক্রাইম পেট্রোল দেখেই ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি এবং আগে পরে কি করবে সেই অনুযায়ী কাজ করেছে।

    তিনি বলেন, তারা জানিয়েছে টাকার জন্যই নীরবকে অপহরণ করা হয়। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগে তাকে রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলা হয়। এ ঘটনায় আটককৃত পাঁচজনকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

    নিহত নীরব মণ্ডলের বাবা শেখর মণ্ডল বলেন, স্কুল ছুটির পর নীরব না আসায় বাসা থেকে ফোন করে আমাকে জানানো হয় । এরপর ফোনে একজন নীরবের মুক্তির জন্য টাকা দাবি করে এবং পুলিশকে না জানাতে বলে। এ সময় আমি বলি পুলিশকে জানাবো, তখন ফোন কেটে দেয়।তখন সোহেলের সঙ্গে নিরবের বাবার বাগবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি আমি ডুমুরিয়া থানা পুলিশকে জানাই এবং পুলিশ ওই মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে  তাদেরকে আটক করে।

    তিনি বলেন, এমনভাবে যেন আর কোনো মা-বাবার বুক খালি না হয়। আমরা চাই হত্যায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি হোক।

    ওসি আরও জানান, অভিযোগ পেয়ে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ মোবাইল নম্বর ট্রাকিং করে বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় খুলনার জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে সোহেলকে আটক করে। পরে দ্বীপ, পিয়াল ও পিতুকে আটক করা হয়। আর মরদেহ উদ্ধারের পর হীরককে আটক করা হয়।  এরপর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রাত ১টায় পরিত্যক্ত ওই বাড়ি থেকে নিরব মণ্ডলের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

    মাহফুজা ৩-২

     

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর