২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    যারা মজুতদারি, কালোবাজারি ও এলসি খোলা নিয়ে দুই নম্বরি করবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে-প্রধানমন্ত্রী

    অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    তিনি বলেছেন, যারা মজুতদারি, কালোবাজারি ও এলসি খোলা নিয়ে দুই নম্বরি করবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং নেবো। প্রয়োজনে আমরা আরও কঠোর ব্যবস্থা নেবো। মানুষের কষ্ট যেন না হয় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবো।

    বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে আমাদের দেশের অর্থনীতি তিন ধরনেরই আছে- সরকারি, বেসরকারি ও সমবায়ভিত্তিক। আমাদের সমবায়ভিত্তিক কিন্তু আছে, নেই তা না। তবে এখানে ভোগ্যপণ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আমরা বেশি গুরুত্ব দিয়েছি।

    তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের আন্তর্জাতিক বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশেও জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করতে হয়েছে। গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রাকে স্বাভাবিক রাখতে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’

    শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে জানতে পেরেছি- সারা বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দারুণ অভাব দেখা দেবে, এজন্য আমরা শুরু থেকেই সবাইকে আহ্বান করছি, সবাই যেন এক ইঞ্চি অনাবাদি জমি না থাকে। যত অনাবাদি জমি আছে আবাদ করা হোক ও উৎপাদন করা হোক। আমাদের খাদ্যের চাহিদা যেন আমরা নিজেরা নিজেদের আওতায় রাখতে পারি সেই ব্যবস্থাটা নিয়েছি।

    সরকারপ্রধান বলেন, এই আহ্বান করার পর কিন্তু সমগ্র দেশেই একটা উৎসব দেখা দিচ্ছে। আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ও দেশের সব মানুষই কিন্তু, কিছু কিছু উৎপাদন করেছে। দেশের মানুষের ভোগ্যপণ্যের অধিকার যেন নিশ্চিত থাকে, সেজন্য ভোগ্যপণ্য অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ সালে আমরা পাস করেছি। তারই অধীনে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থেকে শুরু করে আমাদের খাদ্য মন্ত্রণালয় সব ক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।

    শেখ হাসিনা বলেন, রোজা-রমজান মাসে কিংবা বিভিন্ন চাহিদার মাসে তারা যে করেই হোক জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। অনেক সময় তারা পণ্য আমদানি করতে একটু ঢিলেমি করেন। জিনিসের দাম বাড়িয়ে চাহিদা বাড়িয়ে তারপর তারা ব্যবসা করতে চান। এটা আসলে অমানবিক। যারা মজুতদারি, কালোবাজারি ও যারা এলসি খোলা নিয়ে দুই নম্বরি করবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং নেবো। প্রয়োজনে আমরা আরও কঠোর ব্যবস্থা নেবো।

    এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে মূল্যস্ফীতির প্রভাব হ্রাস পাওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

    কুইক রেন্টালসহ বিভিন্ন দুর্নীতি বিষয়ে সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর আগে কোনো সরকার এতো বড় প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এটা আওয়ামী লীগ সরকার করতে পেরেছে।

    ‘আপনার (স্পিকার) মাধ্যমে আমি আমার প্রশ্নকর্তাকে চ্যালেঞ্জ করছি কোথায়, কখন, কতটুকু দুর্নীতি হয়েছে সেই কথাটা তাকে এখানে (সংসদে) স্পষ্ট বলতে হবে। তার জবাব আমি এখানে দেবো। একটি কথা আমি এখানে স্পষ্ট বলতে চাই- ওয়ার্ল্ড ব্যাংকও পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিল। সেখানে কি কোনো দুর্নীতি হয়েছিল? দুর্নীতি হয়নি। তারা প্রমাণ করতে পারেনি। এটা শুধু আমার কথা না। কানাডার ফেডারেল কোর্টে যে মামলা হয়, সেই রায়ে বলা হয়েছে- সব অভিযোগে মিথ্যা, কোনো অভিযোগই সত্য না।

    প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, তাহলে এরা কীভাবে বলবে দুর্নীতি হচ্ছে? যদি দুর্নীতি হতো তাহলে এত অল্প সময়ে এরই মধ্যে এত বড় বড় প্রজেক্টের কাজ শেষ হতো কোনোদিন? এর আগে কখনও হয়েছে?

    ‘সেখানে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। প্রত্যেকটি পরিবারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে- যেন বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা হয় ও প্রতিটি বিল পরীক্ষা করা হয়। যে নির্দেশনা তার চাইতে এক ফোঁটা বেশি হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, ফাইন করা হয়। বাংলাদেশে এখনো সে অবস্থার সৃষ্টি হয়নি।’

    বিএনপির জামাতের আমলে বিদ্যুতের উৎপাদন হ্রাস করা হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ বিদ্যুৎ পেতো না। দিনের পর দিন বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিল। ইন্ডাস্ট্রিগুলো চলতে পারতো না। গ্যাসের জন্য হাহাকার ছিল। আমরা এসে এসব সমস্যার সমাধান করি। সে অনুযায়ী আমরা ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি।

    এরপর যারা বেশি বলবেন তাদের বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও সংসদে হুমকি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    তথ্য-প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিতে এবং ই-গভার্নেন্স করতে বর্তমান সরকার সবধরনের কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক লাখ ১৬ হাজার ফ্রিল্যান্সারকে প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করা হচ্ছে।

    মাহফুজা ১১-১

     

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর