১৫ দিনেও বাংলাদেশি কৃষক মেজবাহারের মরদেহ ফেরত দেয়নি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী -বিএসএফ। মরদেহ পাওয়ার আশায় দিন গুনছে মেজবাহারের মেয়েরাএবং তার স্ত্রী।
ফেনীর পরশুরামের উত্তর গুথুমা গ্রামের মৃত মফিজুর রহমানের ছেলে মেজবাহার। কৃষি কাজের পাশাপাশি তিনি স্থানীয়ভাবে গরুর ব্যবসা করতেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান বিএসএফ সদস্যরা গত ১৩ নভেম্বর বিকেলে মেজবাহারকে সীমান্ত এলাকা থেকে জোর করে ধরে নিয়ে যান। তিনদিন পর ১৬ নভেম্বর সকালে সীমান্তের কাঁটাতারের পাশে শূন্যরেখার ভারতীয় অংশে ঝোপের মধ্যে মেজবাহারের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। ১৭ নভেম্বর ভোরে বিএসএফ মরদেহ উদ্ধার করে। তাদের আইন অনুযায়ী সব নিয়ম পালন শেষে মরদেহ ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে নিয়ে যায়। তবে এখনো তা হস্তান্তর করেনি বিএসএফ।
রোববার দুপুরে মেজবাহারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের সবাই শোকাহত। মেজবাহার এর স্ত্রী মরিয়ম জানান তার স্বামী ধান কাটতে গেলে বিএসএফ ধরে নিয়ে যায়। তিনি কোনো অন্যায় করেননি। এখন মরদেহ ফেরত চান। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও হত্যার বিচারও দাবি করেন তিনি।তিনি জানান, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন।
বিজিবি জানায়, ১৬ নভেম্বর বেলা ১১টায় সীমান্তের শূন্যরেখার কাঁটাতারের পাশে ঝোপের মধ্যে এক ব্যক্তির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। সেটিকে মেজবাহারের মরদেহ হিসেবে শনাক্ত করা হয়। মরদেহটি ১৬ ঘণ্টা পড়ে ছিল ওই স্থানে।
১৬ নভেম্বর বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়। পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে গুথুমা সীমান্ত ফাঁড়ির কমান্ডার সুবেদার ওমর ফারুক ও ভারতের পক্ষে ত্রিপুরার শাড়াসিয়া সীমান্ত ফাঁড়ির কমান্ডার সত্য পাল উপস্থিত ছিলেন।
ফেনীর ৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম আরিফুল ইসলাম জানান, আইনগত আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়নি বলে মরদেহটি এখনো হস্তান্তর করেনি বিএসএফ। কবে হস্তান্তর করবে তাও জানায়নি। তবে আইনগত প্রক্রিয়া শেষ হলেই তারা মরদেহটি হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা শামসাদ বেগম মুঠোফোনে বলেন, ভারতের আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলে মরদেহটি হস্তান্তর করার কথা রয়েছে। মেজবাহারের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করা হবে বলে আশ্বাস দেন এ কর্মকর্তা ।
মাহফুজা ২৭-১১