নারীকে শালিসে লাঠিপেটা করায় বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে তরিকুল ইসলাম নামের এক ইউপি সদস্যকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে । এ ঘটনায় জড়িত আরেক ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবির পলাতক রয়েছেন।
রোববার (২৪ এপ্রিল) সকালে সারিয়াকান্দি থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলামকে ।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, সারিয়াকান্দি উপজেলার ধাপ গ্রামের কবিরাজ আব্দুল খালেক নিজেকে জিনের বাদশা পরিচয় দিয়ে বেড়ায়। তিনি পার্শ্ববর্তী মালোপাড়া গ্রামের এক নারীকে ধর্ম মেয়ে বানিয়ে সেখানে যাতায়াত করতেন। আব্দুল খালেক জিনের মাধ্যমে তার ধর্ম মেয়ের বাড়ি বিল্ডিংয়ে পরিণত করার প্রলোভন দেখিয়ে শুক্রবার (২২ এপ্রিল) রাতে সেখানে যান। এরপর আলাদা একটি ঘরে তিনি জিন হাজিরের কথা বলে অবস্থান করেন এবং সেখানে সবার প্রবেশ নিষেধ করে দেন। ভোরের দিকে জিনের বাদশা আব্দুল খালেক তার ধর্ম মেয়ের স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে সেই ঘরে পাঠাতে বলেন। স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে ঘরে অবস্থান করার বিষয়টি জানতে পেরে পরদিন (শনিবার) সকালে ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম ওই বাড়িতে হাজির হয়ে কবিরাজকে আটক করেন। এরপর কবিরাজ ও তার তার ধর্ম মেয়েকে গ্রামের বিশু প্রামানিকের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখা হয়। সকাল ১০টার দিকে গ্রাম্য শালিস হবে মর্মে প্রচার চালানো হয়। পরে কয়েকশ নারী পুরুষের সামনে শালিসে জিনের বাদশা আব্দুল খালেককে লাটিপেটা, কান ধরে উঠাবস করা এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, তার ধর্ম মেয়েকে লাঠিপেটা করার সিদ্ধান্ত দেন ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউপি সদস্য হুমায়ন কবির আব্দুল খালেককে লাঠিপেটা করেন এবং তাকে বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ায় তার ধর্ম মেয়েকে লাঠিপেটা করেন ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম।
শালিসে লাঠিপেটার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ আজ (রোববার) সকালে ইউপি সদস্য তরিকুলকে গ্রেপ্তার করে।
সারিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ইউপি সদস্য তরিকুলকে গ্রেপ্তার করা হলেও অপর ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবীর পলাতক রয়েছেন। বাকী জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মামলারও প্রস্তুতি চলছে।