৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    আবারো  বিশ্ববাজারে  বড় দরপতন হলো স্বর্ণের

    গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে রুপা ও প্লাটিনামের দাম। গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম দুই শতাংশের ওপর কমেছে। এতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৪০ ডলারের ওপর কমে ১৯৫০ ডলারের নিচে নেমেছে।

    বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন হলেও আপাতত দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর পরিকল্পনা নেই বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস)।

    এ বিষয়ে বাজুস সাধারণ সম্পাদক জাগো নিউজকে বলেন, আমরা সর্বশেষ যখন স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছি, সে সময় পরিকল্পনা ছিল ভরিতে ২ হাজার ৫০০ টাকা বাড়ানোর। কিন্তু বৈশাখ ও ঈদের কথা চিন্তা করে দেড় হাজার টাকার মতো বাড়ানো হয়েছে। তাই বিশ্ববাজারে দাম কমলেও আমরা এখনই স্বর্ণের দাম কমানোর চিন্তা করছি না।

    স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের এই নেতা বলেন, ডলারের দাম হু হু করে বাড়ছে। বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামেও বেশ অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। স্বর্ণের বাজার কোন দিকে যাচ্ছে এ নিয়ে সবাই কনফিউজড। আমাদের ক্রেতারাও কনফিউজড। এবার ঈদকেন্দ্রিক বিক্রি জমে ওঠেনি।

    এদিকে ইউক্রেনে রাশিয়া আগ্রাসন শুরু করার পর থেকেই বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। হুট করে স্বর্ণের দামে বড় উত্থান, এরপর আবার বড় পতনের ঘটনা ঘটছে গত দুই মাস ধরেই।

    গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। এতে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর পর প্রথম সপ্তাহেই বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ বা ৮২ দশমিক ৪৮ ডলার বেড়ে যায়। এতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৭০ দশমিক শূন্য ৭ ডলারে উঠে যায়।

    যার পরিপ্রেক্ষিতে ৩ মার্চ থেকে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ২৬৫ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৭৮ হাজার ২৬৫ টাকা।

    ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৯১ টাকা বাড়িয়ে ৭৪ হাজার ৭৬৬ টাকা করা হয়েছে। ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৬৪ হাজার ১৫২ টাকা করা হয়েছে। সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ২১৬ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫৩ হাজার ৪২১ টাকা।

    দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর পর এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়ে দুই হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। ফলে ৯ মার্চ দেশের বাজারে আবার বাড়ানো হয় স্বর্ণের দাম। এ দফায় ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৭৯ হাজার ৩১৫ টাকা।

    ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৭৫ হাজার ৬৯৯ টাকা করা হয়। ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরির দাম ৮১৬ টাকা বাড়িয়ে ৬৪ হাজার ৯৬৮ টাকা আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৬৪২ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৫৪ হাজার ৬২ টাকা।

    অবশ্য এরপর বিশ্ববাজারে টানা দরপতনের মধ্যে পড়ে স্বর্ণ। ফলে ১৬ মার্চ এবং ২২ মার্চ দুই দফায় দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানো হয়। এর মধ্যে ২২ মার্চ সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে করা হয় ৭৭ হাজার ৯৯ টাকা।

    এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরির দাম ১ হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে ৭৩ হাজার ৬০০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরির দাম ৯৩৩ টাকা কমিয়ে ৬৩ হাজার ১০২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৪৫৮ টাকা কমিয়ে ৫২ হাজার ৬০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

    এরপর রোজা শুরু হলে দেশের বাজারে ঈদকেন্দ্রিক স্বর্ণালঙ্কারের বিক্রি কিছুটা বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে দামেও। বিশ্ববাজারে খুব একটা দাম না বাড়লেও গত ১২ এপ্রিল থেকে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে ৭৮ হাজার ৮৪৯ টাকা নির্ধারণ করে বাজুস।

    এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৪৯ টাকা বাড়িয়ে ৭৫ হাজার ৩৪৯ টাকা করা হয়েছে। ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৪৫৮ টাকা বাড়িয়ে ৬৪ হাজার ৫৬০ টাকা করা হয়েছে। সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ২২৪ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫৩ হাজার ৮২৯ টাকা।

    বাজুস দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর মধ্যেই বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা বাড়তে দেখা যায়। এতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম প্রায় দুই হাজার ডলারের কাছাকাছি চলে যায়। তবে গত সপ্তাহে বড় দরপতন হওয়ায় প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১৯০০ ডলারের নিচে নেমে গেছে।

    গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২ দশমিক ২০ শতাংশ বা ৪২ দশমিক ৪৮ ডলার কমেছে। এর মধ্যে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেই কমেছে ২০ দশমিক ৫০ ডলার বা ১ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৩১ ডলার।

    এদিকে স্বর্ণের পাশাপাশি গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে রুপা ও প্লাটিনামের দামেও বড় পতন হয়েছে। এক সপ্তাহে ৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স রুপার দাম দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ১২ ডলারে। আরেক দামি ধাতু প্লাটিনামের দাম গত সপ্তাহজুড়ে কমেছে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স প্লাটিনামের দাম দাঁড়িয়েছে ৯২৮ ডলার।

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর