১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    পবিপ্রবিতে উন্নয়নেই এখন স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ

    পবিপ্রবি প্রতিনিধি:পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হঠাৎ প্রবেশ করলে যে কেউই মনে করবে রোদের মাঝেও তীব্র কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে ।বসন্তের এই আগমনীতে ক্যাম্পাস নতুনভাবে সবুজে সজ্জিত হলেও ক্রমাগত ধুলাবালির ছড়াছড়িতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে ক্যাম্পাসের পরিবেশ। বাড়ছে বায়ু দূষণ, ভারী হয়ে উঠছে বাতাস। যেখানে নিঃশ্বাস নেওয়ার উপায় নেই। ধুলাবালিতে বিব্রতকর অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কখনো হালকা, আবার কখনো চক্কর দিচ্ছে ঘূর্ণি বাতাস। সাথে নেচে উঠছে বালু আর ধুলা।

    এসবের পিছনের কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা গেলো ২০১৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর একনেটে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকতর উন্নয়নের জন্য ৪৫১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার প্রকল্প পাস হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য দুটি বহুতল ভবন, খামার বাড়ি সম্প্রসারণ, সুফিয়া কামাল হলের সম্প্রসারণ, একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও সালসাবিল লেকের মাটি ভরাটের কাজ চলছে। এসকল ভবনের নির্মাণসামগ্রী আনার জন্য যানবাহন হিসেবে ট্রাক ব্যবহৃত হয়।অতিরিক্ত নির্মাণসামগ্রী বোঝায় করে বিরতিহীন ট্রাকের চলাচলে ইতিমধ্যেই প্রধান প্রধান সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার ফলে শিক্ষার্থীদের চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে, ধুলাবালি এবং দূর্ঘটনার মতো ভয়াবহ ঝুঁকির সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও রাস্তায় রিক্সা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলের কারণেও ধুলাবালির পরিমাণ বাড়ছে আরো বহু গুণ। এতে প্রতিদিনই ছড়িয়ে পড়ছে ধুলার দূষণ। কমছে অক্সিজেন, বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

    সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ফটক থেকে দ্বিতীয় ফটক, টিএসসি থেকে একাডেমিক অথবা সৃজনী বিদ্যানিকেতন থেকে এম. কেরামত আলী হল সব জায়গায় যেন ধুলোর মহড়া। বাদ যায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথকেয়ার সেন্টার কিংবা কেন্দ্রীয় মসজিদের সম্মুখ সড়ক। এসব সড়কে মাষ্ক ছাড়া বের হওয়া কষ্টকর। গত দুদিন ধুলোর বিস্তার ঠেকাতে সন্ধ্যার পর পানি ঢালা হলেও সেগুলো যথেষ্ট নয় বলে অভিমত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের। ক্যের আশেপাশে সড়কের পাশে অনেক খাবারের দোকান রয়েছে। সেগুলো শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় খাচ্ছে। এসব ধুলো-বালি যুক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের ফলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।

    ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রাস্তা থেকে সৃষ্ট ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা। নিয়মিত পানি ছিটিয়ে না দেওয়ায় ধুলাবালির পরিমাণ বেড়েই চলেছে প্রতিনিয়ত। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলোতে প্রচুর ধুলাবালির কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন তারা। এমনকি রাস্তায় স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করাও মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, নিঃশ্বাসে অক্সিজেনের পরিবর্তে ধুলাবালি গ্রহণ করছি।

    বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথকেয়ার সেন্টারের চীফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ এ টি এম নাসিরউদ্দিন বলছেন, গত দুই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথকেয়ারে আসা শিক্ষার্থীর একটি বড় অংশই ধুলোবালি ও এ্যাজমা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আসছেন। এসব ধুলোবালিতে শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের বেশী ঝুঁকিতে ফেলছে। তাছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও আ্যাজমা সহ অন্যান্য রোগের ঝুঁকি রয়েছে।

    এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মানাধীন শেখ হাসিনা হলের ঠিকাদার মোঃ আমীর হোসেনকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ধুলোবালি ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি আমরা অবহিত। বিষয়টি সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্তের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, ক্যাম্পাসে ধুলোবালির কারনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যে সমস্যাগুলো হচ্ছে তা নিয়ে গত রবিবার পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস বিভাগের সভায় আলোচনা হয়েছে। সেখানে এই ধুলোর বিস্তার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ সমূহ নিয়ে মূল্যয়ন হয়েছে। আশা করছি অতিদ্রুত বিষয়টির সমাধান হবে।

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর