নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড, নর্থ আইল্যান্ড ও তার আশপাশের এলাকায় ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েলার প্রভাবে দমকা হওয়া, প্রবল বর্ষণ ও জলোচ্ছাস শুরু হয়েছে । ৫৮ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর পাশাপাশি বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে ।ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্যা গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
নিউজিল্যান্ডের নর্থল্যান্ড, করোমন্ডেল এবং তাইরাউহিটি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে এবং সেখানে ঘূর্ণিঝড় কবলিত মানুষদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। আর যারা বাড়িতে আটকা পড়েছেন, তাদের জন্য আগামী তিন দিনের পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের আবহাওয়া অফিস জরুরি আবহাওয়া সতর্কতা জারি করেছে। আবহাওয়া অফিস বলেছে, আগামীকাল সোমবারও ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। করোমন্ডেল শহরের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের বিমান সংস্থা ঝড় আসার আগেই বেশ কয়েকটি অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট বাতিল করেছে। নিউজিল্যান্ডের মেটসার্ভিস আরও সতর্ক করে বলেছে, বাতাস আরও যথেষ্ট শক্তিশালী হতে পারে। গাছ ও বিদ্যুতের লাইনের ক্ষতি করতে পারে। সেই সঙ্গে তীব্র বৃষ্টিপাতের ফলে আগামী দিনে হতে পারে বন্যা এবং ভূমিধস ।
প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স বলেন, দয়া করে তীব্র আবহাওয়া সতর্কতাকে গুরুত্ব সহকারে নিন এবং ঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত আছেন কিনা তা নিশ্চিত করুন।’
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার রাতে অস্ট্রেলিয়ার তাসমান সাগরে নরফোক দ্বীপপুঞ্জের কাছে ঘনীভূত হয় গ্যাব্রিয়েলা। বর্তমানে ঘূর্নিঝড়টি নিউজিল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের কাছাকাছি রয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা কিংবা মঙ্গলবার ভোরের নিউজিল্যান্ডের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে গ্যাব্রিয়েলা বলে জানান আবহাওয়াবিদরা।
নরফোক দ্বীপটি নিউ ক্যালেডোনিয়া ও নিউজিল্যান্ডের কাছে প্রশান্ত মহাসাগরে মধ্যে মাত্র ৩৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে। নরফোক আইল্যান্ড কর্তৃপক্ষ বলেছে, সেখানে ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছগুলোকে রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।
নিউজিল্যান্ডের সরকারি দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের অকল্যান্ড শাখার উপ প্রধান র্যাচেল কেলেহার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এখন অকল্যান্ড ও তার আশপাশের এলাকায় যে আবহওয়া বিরাজ করছে, সেটিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রাথমিক স্তর বলা যায়।তিনি আরো বলেন আমাদের প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতির কাজ শুরু করে দিতে হবে এবং এখন নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকার সময় নেই।
সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ইতোমধ্যে অকল্যান্ড এবং নর্থ আইল্যান্ডে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সরকারি কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ লোকজনকে বাড়ির বাইরে না বেরোনোর অনুরোধও জানিয়েছে।
দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার অকল্যান্ডসহ আরও ৪ অঞ্চলে ইতোমধ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অকল্যান্ড ও এর আশে পাশের অঞ্চল জুড়ে ১৫০ জন উদ্ধারকর্মী অবস্থান করছেন।
মাহফুজা ১৩-২