ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল ২৮ হাজার। এই ঘটনায় আহত হন প্রায় ৮০ হাজার। খবরটি জানায় বিবিসি।
জাতিসংঘ জানায়, ভূমিকম্পের পর সিরিয়ায় ৫৩ লাখের মতো মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। এছাড়া দুই দেশে ৯ লাখ মানুষের জরুরি গরম খাবার প্রয়োজন।
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতে জানান, শুধু তুরস্কেই মারা গেছেন ২৪ হাজার ৬০০ জন। দেশটির ১০টি প্রদেশের ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । তিনি আরও জানান, ৩২ হাজার ৭১টি টিম উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।
উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তুপে আটকে পড়াদের জীবিত উদ্ধার করতে এখনো অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন । ভূমিকম্পের পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ায় অনেক জীবিতদের খুঁজে পাওয়ার আশা কমে যাচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, বিশেষ করে সিরিয়ায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারীরা ধসে পড়া হাজার হাজার ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রচণ্ড ঠান্ডায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
জার্মান উদ্ধারকারীরা এবং অস্ট্রিয়ান সেনাবাহিনী শনিবার অনুসন্ধান অভিযান স্থগিত করে । একটি অপরিচিত গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়। যদিও সংঘর্ষের কারণ জানাননি উদ্ধারকারীরা।
অস্ট্রিয়ান সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেন, হাতায় প্রদেশে অজ্ঞাত গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে অস্ট্রিয়ান ফোর্সেস ডিজাস্টার রিলিফ ইউনিটের কয়েক ডজন কর্মী অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে একটি বেস ক্যাম্পে আশ্রয় চেয়েছেন।
খাদ্য সরবরাহ কমে যাওয়ায় নিরাপত্তা আরও খারাপ হবে বলে জানান একজন উদ্ধারকারী।
ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকায় লুটপাটের অভিযোগে প্রায় ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্থানীয় গণমাধ্যম জানায় এছাড়া বেশ কয়েকটি বন্দুক জব্দ করা হয়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, এ পরিস্থিতিতে কেউ আইন ভঙ্গ করলে জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করবেন তিনি।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তুর্কি সেনাবাহিনী সুরক্ষা দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে এবং উদ্ধার অভিযান পুনরায় শুরু করার অনুমতি দিয়েছে তারা।
সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ গ্রুপ আইএসএআর এবং জার্মানির ফেডারেল এজেন্সি ফর টেকনিক্যাল রিলিফের (টিএসডব্লিউ) জার্মান শাখাও নিরাপত্তা উদ্বেগ উল্লেখ করে অপারেশন স্থগিত করেছে।
রয়টার্স জানায়, তুর্কি কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিরাপদ মনে করার সঙ্গে সঙ্গে আবার কাজ শুরু করবে জার্মান উদ্ধারকারী দলগুলো।
গেল সোমবার তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। ইউএসজিএস তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগি এলাকা থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্বে আঘাত হানে এবং এর গভীরতা ছিল ২৪ দশমিক ১ কিলোমিটার।
মাহফুজা ১২-২