আর্জেন্টিনায় এখন রাত তিনটা। কিন্তু পুরো দেশ জেগে আছে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নদের বরণ করে নিতে। না ঘুমিয়ে বুয়েন্স আয়ার্সে মানুষের ঢল।৩৬ বছর পর তাদের দেশে যে ফিরেছে বিশ্বকাপের ট্রফি। যে ট্রফি নিয়ে দিয়াগো ম্যারাডোনা ১৯৮৬ সালে বুয়েন্স আয়ার্সে ফিরেছিলেন সেই ট্রফি আজ লিওনেল মেসির হাতে। সোনার ট্রফি নিয়ে কাতার থেকে নিজভূমে ফিরেছেন লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা।
রোববার কাতারে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে ২২তম বিশ্বকাপের মুকুট জেতে আর্জেন্টিনা। দোহা থেকে রোম হয়ে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩টায় ইজিজা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিবর্তে অ্যারোপার্কে অবতরণ করে মেসিদের বহনকারী বিমান। ততক্ষণে বুয়েন্স আয়ার্সে ছিল অপেক্ষমান মানুষের ঢল।
কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ৩৬ বছর বিশ্বকাপ খরা কাটিয়েছে দিয়াগো ম্যারাডোনার দেশ। দেশে দেশে এখন মেসি-ডি মারিয়াদের বন্দনা চলছে।
বিমানবন্দরে বেশি মানুষকে ভিড় করতে দেয়নি কর্তৃপক্ষরা। বিমানবন্দরের বাইরেই সব আয়োজন। সমর্থকরা সেখানেই বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের জন্য অপেক্ষা করছেন।বিমান থেকে বের হওয়ার সময় লিওনেল মেসি ডান হাতে সোনার ট্রফি উঁচিয়ে ধরেন। আনুষ্ঠানিকতা সেরে মেসি-ডি মারিয়ারা ছাদখোলা বাসে করে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসেন রাত ৩টা ৩০ মিনিটে। সে সময় বাইরে হাজার হাজার মানুষ পতাকা নেড়ে, স্লোগানে স্লোগানে তাদের অভিবাদন জানায়। তাদের অভিবাদনের জবাব দেন বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্যরা।
বিমানবন্দর থেকে মেসিরা চলে যাবেন নিকটস্থ আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) ট্রেনিং সেন্টারে। সেখানে তারা বিশ্রাম নিবেন মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত। এরপর ছাদখোলা বাসে করে রওয়ানা দিবেন আর্জেন্টিনার ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ ওবেলিস্কের দিকে।যেকোনো ক্রীড়ানন্দ উদযাপনের ঐতিহাসিক ভেন্যু এটি। সেখানেই মেসি-ডি মারিয়াদের আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হবে। হবে আনুষ্ঠানিক উদযাপনও। আর এই উদযাপনে যাতে দেশের সকলেই অংশ নিতে পারে সেজন্য দেশটিতে মঙ্গলবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে
১৯৮৬ সালে ম্যারাডোনার নেতৃত্বে মেক্সিকোর মাটিতে বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। এরপর ছিল কেবলই অপেক্ষার পালা। ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ২০১৪ বিশ্বকাপে ফাইনালে উঠলেও জার্মানির কাছে শেষ মুহূর্তের গোলে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল মেসি, ডি মারিয়া, গঞ্জালো হিগুয়েনদের। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপেও সুবিধা করতে পারেনি আকাশী-সাদা জার্সিধারীরা।
তবে ব্রাজিলকে হারিয়ে সবশেষ কোপা আমেরিকা শিরোপা জয়ের পর টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকা এক দল নিয়েই এবার স্বপ্নপূরণের মিশনে কাতারে এসেছিলেন মেসিরা। শেষ পর্যন্ত তাদের মাথায় উঠেছে বিশ্বজয়ের রাজমুকুট। তিন যুগের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মেসিরা এখন ‘তিন তারকা’ খচিত চ্যাম্পিয়ন।
মাহফুজা ২০-১২