পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বান্নুতে অবরুদ্ধ কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি) সেন্টারে জিম্মি উদ্ধারে অভিযান শেষ করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। উদ্ধার অভিযানে জিম্মিকারী ৩৩ সন্ত্রাসী এবং দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তা মারা গেছেন।
মঙ্গলবার পাকিস্তানি প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ দেশটির জাতীয় পরিষদে এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে এ তথ্য জানান। খবরটি জানায় জিও নিউজের।
তিন দিন আগে সিটিডি সেন্টারটি অবরুদ্ধ করে কর্মকর্তাদের জিম্মি করে নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) জঙ্গিরা। কারাগারের মতো এই সেন্টারটিতে গ্রেপ্তার জঙ্গিদের রাখা হয়। বন্দী জঙ্গিরা গত রোববার কারা ভবনটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এসময় তারা নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েক সদস্যকে জিম্মি করে।
সূত্রের বরাত দিয়ে জিও নিউজ জানায়, জঙ্গিরা নিরাপদে আকাশপথে আফগানিস্তানে যাওয়ার দাবি করেছিল।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ (এসএসজি) আজ দিনের প্রথমভাগে অভিযান শুরু করে। এরপর ১০ থেকে ১৫ জন সৈন্য আহত এবং দু’জন মারা যান। স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার মধ্যে ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয় এসএসজি এবং জিম্মি সবাইকে মুক্ত করা হয়েছে।
খাজা আসিফ বলেন, জিম্মিকারীরা একই গোষ্ঠী বা সংগঠনের নয়, বরং বিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।
পাকিস্তানি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, কম্পাউন্ডের ভেতরে গ্রেফতার হওয়া ৩৩ জন সন্ত্রাসী ছিল। তাদের মধ্যে একজন এক নিরাপত্তারক্ষীকে পরাস্ত করে অস্ত্র কেড়ে নেয় এবং তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে। পরে বাকি সন্ত্রাসীরা মিলে পুরো ভবন দখল করে নেয়।
জিও নিউজ জানায়, এ ঘটনায় জড়িতদের সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের যোগসূত্র রয়েছে। এ কারণে পাকিস্তান সরকার টিটিপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেয় ।
পাকিস্তানি প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ ঘটনায় খাইবার পাখতুনখাওয়ায় ক্ষমতাসীন ইমরান খানের দল পিটিআই’র কঠোর সমালোচনা করেছেন । তিনি বলেছেন, এ ঘটনার দুর্ভাগ্যজনক দিক হলো, সন্ত্রাসবাদ আবার খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু সীমান্তের ওপার থেকে বা স্থানীয়ভাবে সন্ত্রাসীরা আবার কেপি ও বেলুচিস্তানে উঠছে, এর স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, অঞ্চলটিতে আরও অপহরণ ও জিম্মিদশার ভয়ে স্থানীয় স্কুলগুলো মঙ্গলবার বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র মুহাম্মদ আলী সাইফ বলেন, সন্ত্রাসীরা অন্তত আটজন পুলিশ ও সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে নিরাপদে আফগানিস্তানে যাওয়ার সুযোগ দাবি করে।
এর পরপরই স্থানীয় সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, তালেবান সদস্যরা শহরতলির যেকোনো স্কুলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করতে পারে। আমরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাচ্ছি না এবং সে কারণেই আজকের জন্য স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ আতঙ্কে ঘটনাস্থলের আশপাশের সব অফিস এবং রাস্তাঘাটও বন্ধ করে দেয় পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী।
মাহফুজা ২০-১২