সরকার পতন এত সোজা না বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। রোববার মহান বিজয় দিবসের বিশেষ আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর কৃষিবিদ মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ।
বিজয় আমরা এনেছি, সেটা যেন কেউ নস্যাৎ করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী । শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। বিজয়ের পতাকা সমুন্নত রেখে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেক জিনিস আমদানি করতে হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। সেজন্য দামও বেড়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী তেলের মূল্য ও গ্যাসের মূল বেড়ে গেছে। সেজন্য আমাদের কিছুটা সাশ্রয়ী হতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ভর্তুকিমূল্যে দিচ্ছি। সামনে আর দিতে পারবো না। আমাদের যেটা খরচ সেটা কিন্তু দিতে হবে। তাহলে দেবো, না হলে দেবো না।’
কৃষিপণ্য উৎপাদনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের আগাম সাবধানতা নিতে হবে। যাতে সংকটের পরিস্থিতিতে না পড়ি। সেজন্য জমিতে বাগানে বা ছাদে হলেও কিছু উৎপাদন করে সবাই।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চক্রান্ত ষড়যন্ত্র করতে পারবে…এটা করে ২০০১ সালে আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেয়নি, তবে সেজন্য ভোগান্তি এদেশের মানুষের হয়েছে। এখন মানুষের সজাগ থাকতে হবে আবার ভোগান্তিতে পড়তে হবে নাকি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিজয়ের পতাকা সমুন্নত রেখে আমরা এগিয়ে যাবো উন্নয়নের পথে অপ্রতিরোধ্য গতিতে গড়ে তুলবো স্মার্ট বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ‘১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, দেশের টাকা পাচার, এতিমের টাকা আত্মসাৎ করার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামির নেতৃত্বে বড় বড় তাত্ত্বিকরা এক হয়ে যায় কীভাবে? সেটাই আমার প্রশ্ন।
তিনি বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারা কখনোই চায়নি এই বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে সারাবিশ্বে একটা মর্যাদা নিয়ে চলুক। তাদের লক্ষ্যটাই ছিলো বাংলাদেশ যেন একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে বিজয় যেন অর্থহীন হয়ে পড়ে। আর এই দেশ যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সম্পূর্ণ বিপথে চলে যায়।
‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই এদেশের মানুষ উপলব্ধি করতে পেরেছিলো যে, সরকার মানুষের সেবক। মানুষের শক্তি নিয়েই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। ৯৬ থেকে ২০০১ একটা স্বর্ণযুগ ছিলো। তারপর আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। ২০০১ সালে খুন, সন্ত্রাস অগ্নি-সন্ত্রাস, নির্যাতন, হত্যা কি না হয়েছে এদেশে।
এসময় মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা দেওয়া এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক দেশ গড়ার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সিমিন হোসেন রিমি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
সভা সঞ্চালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।
মাহফুজা ১৮-১২