স্টাফ রিপোর্টার : পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় চার হাজার নারী-পুরুষকে, আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ দিয়েছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। প্রয়োজন মতো দেয়া হচ্ছে অনুদানও। নতুন ঘর আর কাজের প্রশিক্ষণ পেয়ে খুশি পদ্মাপারের লোকজন। ক্ষতিগ্রস্তদের জীবনমান উন্নয়নে, সব ধরনের সহায়তাও দেবে সরকার; এমনটিই জানান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।
দেশের সবচে’ বড় উন্নয়ন প্রকল্প পদ্মা সেতু নির্মাণে দুই পার মিলিয়ে অধিগ্রহণ করা হয়েছে, প্রায় দু’হাজার ছয়শ’ ৯৩ হেক্টর জমি। ক্ষতিপূরণ হিসেবে বরাদ্দও করা হয়েছে সমপরিমাণ। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের পূনর্বাসনই যথেষ্ট হয়নি, নদীকে কেন্দ্র করে জীবিকা নির্বাহ করা, অধিগ্রহণকৃত জমির প্রায় সাড়ে বাইশ হাজার পরিবারের। তাদের কর্মসংস্থানের চিন্তাও করতে হয়েছে সরকারকে।
যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাদের জন্য আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করে, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। মুন্সীগঞ্জের প্রায় চার হাজার নারী-পুরুষকে ১২টি কোর্সে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। রবিবার সেই কর্মসূচির সনদ বিতরণ ও অনুদানের টাকা তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অসীম সাহসিকতা ও দুরদর্শিতার কারনে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। আমি দেশবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুরসহ সর্বস্তরের জনগণকে এ সেতু বাস্তবায়নে সরকারকে সর্বাত্নক সহযোগিতার জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, পদ্মা সেতু শুধু একটি সেতু নয়, এটি আমাদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন। এ সেতুর মাধ্যমে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। ১.২৩ % জিডিপি প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে। দারিদ্র্য হ্রাস পাবে ০.৮৪%। পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য খুলে গেছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। এ অঞ্চলসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পাবে। ইতিমধ্যে এসব জেলায় নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠছে। এ অঞ্চলে বিশ্বমানের অলিম্পিক ভিলেজসহ স্পোর্টস সিটি, বেনারসি তাঁতপল্লী, আইকন টাওয়ার, ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমিসহ বড় বড় প্রকল্প গ্রহনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার । সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণও বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে। সেগুলোতে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। সবমিলিয়ে এটি বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
এরই মধ্যে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহায়তায় অনেকেই বিভিন্ন ধরনের কাজ শুরু করেছেন। পরিকল্পনা রয়েছে প্রয়োজনে অনুসারে ঋণ দেয়ারও। এমন উদ্যোগে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। প্রত্যাশা সেতুর ছোঁয়ায় উন্নয়নের ধারা ভুলিয়ে দেবে তাদের ক্ষতি।