ঢাকার কলবাগান থানার স্থায়ী ভবন নির্মাণে বিকল্প জায়গা খুঁজে বের করতে উদ্যোগী হওয়ার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
আজ দুপুরে তেজগাঁও সরকারি বিজ্ঞান কলেজে ঈদবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে তেঁতুলতলা মাঠ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তবে তেঁতুলতলা মাঠে থানা হবে কি না, এটি এখনো আলোচনাধীন বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, ‘ডিসি জায়গাটি খাস জমি বলে চিহ্নিত করে বরাদ্দ দিয়েছে কলাবাগান থানাকে। সমস্ত প্রক্রিয়া শেষে যখন ভবন নির্মাণ করতে যায়, তখন খেলার মাঠের দাবিতে…। আমরা মনে করি, খেলার মাঠে বাচ্চারা খেলাধুলা করবে, এটাই স্বাভাবিক এবং খেলার মাঠ যাতে থাকে। খেলার মাঠের ব্যবস্থা করতে হবে। মেয়রকে বলেছি, বিকল্প একটা খোঁজার জন্য। আমাদের মেয়রও বলেছেন, এই জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে দিতে। যদি না হয়, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও এটা অতীব জরুরি। এটা আমরা পরবর্তী সময়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব, কী করা যায়।’
ঢাকায় শিশুদের খেলার মাঠ কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, ‘আমরা যে খেলাধুলা করেছি, সেই অবস্থাটা এখন আর নেই। আমরা সে জন্য কষ্ট বোধ করি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। এর মূল কারণ আমাদের নগরায়ণ, আমাদের জায়গা কম।’
তবে থানার জন্যও স্থায়ী ভবনের প্রয়োজন বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কলাবাগান থানা ভবন দীর্ঘদিনের একটি প্রচেষ্টা। ভাড়া ভবনে থানা পরিচালিত হচ্ছে। আমরা যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হই, তাহলে সবকিছু মুখ থুবড়ে পড়ে যাবে।’
রাজধানীর পান্থপথের উল্টো দিকের গলির পাশের খোলা জায়গাটি তেঁতুলতলা মাঠ। যেখানে স্থানীয় শিশুরা সেখানে খেলাধুলা করে।
কিন্তু গত ৩১ জানুয়ারি কলাবাগানের সেই মাঠে খেলতে যাওয়া কয়েকটি শিশুকে কান ধরে ওঠবস করায় পুলিশ। এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়।
সম্প্রতি মাঠটি কলাবাগান থানা ভবন করার জন্য তাদের বরাদ্দ দেয় ঢাকা জেলা প্রশাসন।
তবে শুরু থেকেই এই মাঠ খেলার জায়গা এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক কাজের রক্ষার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দা রত্না।
তারই ধারাবাহিকতায় রোববার থানা ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ করায় এবং নির্মাণকাজের ভিডিও ধারণ করায় বেলা ১১টার দিকে সৈয়দা রত্নাকে আটক করে পুলিশ। পরে তার ছেলেকেও ধরে নেওয়া হয়। পরে বিক্ষোভের মুখে মাঝরাতে তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
রত্নাকে আটকের বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
সোমবার সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনার যতটুকু জেনেছি, তারা (রত্না ও তার ছেলে) লাইভ ভিডিওতে এসে অনেক কিছু প্রচার করছিল। যেগুলো নাকি একটু অসঙ্গতিপূর্ণ। সে জন্য বারবার নিবৃত করার পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন থামাতে পারেনি, তখন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নিয়েছিল এবং জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’