শান্তি আলোচনার অংশ হিসেবে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসতে চলেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা। তুরস্কের আন্তালিয়া শহরে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ফোরামের আলোচনার ফঁকে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এবারই প্রথম দুই দেশের সর্বচ্চো পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
তুরস্কের শীর্ষ কূটনীতিক মেভলুত কাভুসোগলু সম্প্রতি এক টুইট বার্তায় একথা জানিয়েছেন।
এদিকে আলোচনায় বসার বিষয়টি সংবাদ মাধ্যম টেলিগ্রামকে নিশ্চিত করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। শনিবার ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুলেবা জানান, আলোচনাটি অর্থবহ হলেই তিনি ল্যাভরভের সঙ্গে বসতে প্রস্তুত আছেন।
মেভলুত কাভুসোগলু বলেন, ‘আমরা আশা করছি এই বৈঠকের মাধ্যমে বিবাদমান দুই পক্ষ শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় একমত হবেন।’
মেভলুত কাভুসোগলু বলেন, রোববার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। এ সময় তিনি কিয়েভের সঙ্গে মস্কোর বৈঠক আয়োজনের কথা পুনরাবৃত্তি করেন। পরে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ বৈঠকে বসতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আশা করি যে এই বৈঠকটি একটি টার্নিং পয়েন্ট হবে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার দিক থেকে এটিএকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, বৈঠকের সময় দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলুকে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশ তুরস্কের সঙ্গে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সমুদ্রসীমা রয়েছে। এছাড়া এশিয়ার এ দেশটির সঙ্গে মস্কো ও কিয়েভের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই আঙ্কারা মস্কোর সঙ্গে কিয়েভের লড়াই বন্ধে মধ্যস্ততা করার প্রস্তাব দিয়েছিল। এছাড়া তুরস্ক জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে মস্কোকে যুদ্ধে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিল।
ইউক্রেনের রুশপন্থী দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে গত মাসের ২৪ তারিখ ইউক্রেনে হামলা চালানোর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। তার নির্দেশের পর থেকে পূর্ব ইউরোপের দেশটির তিন দিক থেকে হামলা চালাতে শুরু করে রুশ বাহিনী। দুই পক্ষের মধ্যে চলা লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছেন। উদ্বাস্তু হয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে ২০ লাখের বেশি সাধারণ ইউক্রেনীয়। যুদ্ধে বন্ধে এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের মধ্যে তিন দফা বৈঠক হয়েছে।
সূত্র: আল-জাজিরা