ইউক্রেনে রুশ অভিযানে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারছে না পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটো। তাই সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে ইউক্রেনকে সাহায্য করছে আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ।
দেখা নিই কোন কোন দেশ ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জানান দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনকে ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
আমেরিকার কাছে অত্যাধুনিক জ্যাভলিন অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক এবং বিমান ভূপাতিত করার জন্য স্টিংগার মিসাইল চেয়েছে ইউক্রেন।
পেন্টাগন বলছে, ইউক্রেনের ফ্রন্ট-লাইন যোদ্ধাদের জন্য অ্যান্টি-আরমার, ছোট অস্ত্র, বডি আর্মারের মতো যুদ্ধাস্ত্র পাঠানো হচ্ছে। থাকছে এন্টি-এয়ারক্রাফট সিস্টেমও।
যুক্তরাজ্য
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস জানুয়ারিতে জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনে হালকা অ্যান্টি আর্মার ডিফেন্স ওয়েপন সিস্টেম পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। গত সপ্তাহে ইউক্রেন সেনাবাহিনীকে প্রাণঘাতী প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র দেবার প্রতিশ্রুতি দেয় ডাউনিং স্ট্রিট।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন শনিবার পার্লামেন্টে বলেছেন, ‘রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্য শিগগিরই ইউক্রেনকে আরও সামরিক সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
ফ্রান্স
ইউক্রেনে ইতোমধ্যে সাহায্য পাঠিয়েছে প্যারিস। আরও সামরিক সরঞ্জামের পাশাপাশি জ্বালানি পাঠাচ্ছে ইমানুয়েল ম্যাখোঁর দেশ।
এলিসি প্রসাদ বলছে, কিয়েভের অনুরোধে প্রতিরক্ষামূলক অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট এবং ডিজিটাল অস্ত্র দ্রুত পাঠানো হবে।
নেদারল্যান্ডস
ইউক্রেনকে বিমান প্রতিরক্ষা রকেট এবং অ্যান্টি-ট্যাংক সিস্টেম সরবরাহ করবে ডাচ সরকার। আমস্টারডাম বলছে, ২০০ স্টিংগার এয়ার ডিফেন্স রকেট, ৪০০ সাধারণ রকেট এবং ৫০টি প্যানজারফাস্ট-৩ অ্যান্টি ট্যাংক ইউক্রেন সরকারকে দেয়া হবে।
জার্মানি
ইউক্রেনকে এক হাজার অ্যান্টি-ট্যাংক এবং ৫০০ স্টিংগার মিসাইল দেবে বার্লিন। স্টিংগার মিসাইলগুলো ভূমি থেকে আকাশে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
সংঘাতপূর্ণ এলাকায় অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের নীতি থেকে সরে আসা জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, ‘পুতিন বাহিনীর আগ্রাসন মোকাবিলায় ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। তাই আমরা আমাদের নীতি বদলেছি।’
কানাডা
ইউক্রেনে প্রাণঘাতী সামরিক অস্ত্র পাঠাচ্ছে অটোয়া। এ ছাড়া ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা খাতে ৩৯৪ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে অটোয়া।
সুইডেন
ইউক্রেনে পাঁচ হাজার অ্যান্টি-ট্যাংক রকেটের পাশাপাশি ফিল্ড রেশন এবং বডি আর্মার পাঠিয়ে নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরে এসেছে স্টকহোম।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৩৯ সালে প্রতিবেশী ফিনল্যান্ড আক্রমণ করার পর শেষবার অস্ত্র সহায়তা দিয়েছিল সুইডেন।
বেলজিয়াম
ইউক্রেনকে তিন হাজার স্বয়ংক্রিয় রাইফেল এবং ২০০ অ্যান্টি ট্যাংকের পাশাপাশি প্রায় চার হাজার টন জ্বালানি সরবরাহ করবে বেলজিয়াম সরকার।
পর্তুগাল
নাইট-ভিশন গগলস, বুলেটপ্রুফ ভেস্ট, হেলমেট, গ্রেনেড, গোলাবারুদ এবং স্বয়ংক্রিয় জি৩ রাইফেল দিচ্ছে লিসবন।
গ্রিস
ইউক্রেনে অনেক প্রবাসী গ্রিসের নাগরিক। রুশ হামলায় তাদের ১০ নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে এথেন্স। ইউক্রেনে তারা প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের পাশাপাশি মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে গ্রিস সরকার।
রোমানিয়া
সীমান্ত ঘেঁষা ইউক্রেনের ১১টি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বুখারেস্ট। পাশাপাশি ৩.৩ মিলিয়ন ডলার মূল্যের জ্বালানি, বুলেটপ্রুফ ভেস্ট, হেলমেটসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম পাঠাতে প্রস্তুত রোমানিয়া।
স্পেন
ইউক্রেনে ২০ টন সাহায্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে স্প্যানিশ সরকার; বেশির ভাগই চিকিৎসা এবং প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম।
চেক প্রজাতন্ত্র
চার হাজার মর্টার পাঠাচ্ছে প্রাগ। সেই সঙ্গে ৩০ হাজার পিস্তল, সাত হাজার অ্যাসল্ট রাইফেল, তিন হাজার মেশিনগান, স্নাইপার রাইফেল এবং ১০ লাখ বুলেট যাচ্ছে ইউক্রেনে।
এ ছাড়া কিয়েভকে ১.৬ মিলিয়ন মূল্যের চার হাজার মর্টার দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে চেক প্রজাতন্ত্র।