পাকিস্তানের স্বাস্থ্য খাতে চলমান অর্থনৈতিক সঙ্কটের প্রভাব পড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির জন্য দেশটি ওষুধ তৈরির প্রয়োজনীয় উপকরণ আমদানি করতে পারছে না। ওষুধ উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো । এছাড়া ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতির কারণে চিকিৎসকরা সার্জারি প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, অপারেশন থিয়েটারে হার্ট, ক্যান্সার এবং কিডনিসহ সংবেদনশীল অস্ত্রোপচারের জন্য দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের জন্য প্রয়োজনীয় চেতনানাশক ওষুধের মজুদ আছে । হার্ট, ক্যানসার এবং কিডনির মতো স্পর্শকাতর রোগের অস্ত্রোপচারের জন্য যা অত্যাবশ্যকীয় একটি ওষুধ। এ পরিস্থিতিতে চাকরিও হারাতে পারেন হাসপাতালের অনেক কর্মী।
ব্যবসায়ীরা ওষুধ সঙ্কটের এই পরিস্থিতির জন্য আর্থিক সঙ্কটকে দায়ী করেছেন। তাদের ভাষ্য, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তাদের আমদানির জন্য নতুন লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) ইস্যু করছে না।
পাকিস্তানের ওষুধ উৎপাদন অনেক বেশি আমদানিনির্ভর । প্রায় ৯৫ শতাংশ ওষুধের জন্য ভারত ও চীনসহ অন্যান্য দেশ থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করতে হয়। ডলারের ঘাটতির কারণে করাচি বন্দরে বেশিরভাগ ওষুধ প্রস্তুতকারকদের জন্য আমদানি করা সামগ্রী আটকা রয়েছে।
ওষুধ উৎপাদন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে, ক্রমবর্ধমান জ্বালানি খরচ, পরিবহন খরচ এবং পাকিস্তানি রুপির তীব্র অবমূল্যায়নের কারণে ওষুধ তৈরির ব্যয় ক্রমাগত বাড়ছে।
দেশটির ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জোট পাকিস্তান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন কয়েকদিন আগে এ সমস্যা সমাধানে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের খুচরা ওষুধ বিক্রেতারা জানান, বাজারে এখন খুব সাধারণ কিন্তু অতি জরুরি প্যানাডোল, ইনসুলিন, ব্রুফেন, ডিসপ্রিন, ক্যালপল, তাগরাল, নিমেসুলেদে, হেপামারজ, বুসকোপান এবং রিভোট্রিলের মতো ওষুধগুলো পাওয়া যাচ্ছে না।
গেল মাসে পিপিএমএ –এর কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান সাঈদ ফারুক বুখারি জানান, ওষুধ উৎপাদন প্রায় ২৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। যদি আগামী ৪-৫ সপ্তাহ কাঁচামাল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকে তাহলে ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দেবে।
মাহফুজা ২৬-২