যে জাতি ভাষার জন্য রক্ত দেয়, তাদের ইংরেজি অ্যাকসেন্টে বাংলা বলার দৈন্য ঠিক নয় বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । বাংলা ভাষার বিকৃতির বিরোধিতা ও সমালোচনা করে তিনি বলেন যে তাদের প্রতি করুণা করা ছাড়া আর কিছুই বলার নেই।
বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৩’ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বটাই সবার একটা আবাসস্থল এবং সেখানে অন্য ভাষাও শেখা যাবে। তবে মাতৃভাষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া দরকার। ইংরেজি উচ্চারণে বাংলা ভাষায় কথা বলার প্রবণতার প্রচলন এখন দেখা যায়। আমি মনে করি, এটা জঘন্য। আঞ্চলিক টান দোষের নয় এবং এটা থাকবেই। পৃথিবীর সব জায়গায় আছে।’
তিনি বলেন, ‘ছেলেমেয়েদের ইংরেজি মিডিয়ামে পড়াতে গিয়ে মাতৃভাষার আসল ধ্বনিটা পরিবর্তন করে বিজাতীয় ভাষার সঙ্গে মিলিয়ে বাংলাটাকে ইংরেজি উচ্চারণে বলছে। এটা কেন?
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি ও রেহানা সবসময়ই ছেলে-মেয়েদের বাংলা শেখাবার চেষ্টা করেছি এবং ঘরে বাংলায় কথা বলেছি। কারণ বাংলা ভাষাটা শিখতে হবে।’ নিজেও ভালভাবে কথা বলার ক্ষেত্রে গোপালগঞ্জ এবং ঢাকার ভাষা মিলিয়েই কথা বলে থাকেন উল্লেখ করেন ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভাষার প্রশিক্ষণের জন্য ট্রাস্ট ফান্ড এর ইন্টারেস্টের টাকা থেকে ভাষা শিক্ষার জন্য ফেলোশিপ চালু করা হবে। কোন কোন ভাষা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে শেখানে হবে ইনস্টিটিউট সেই সিদ্ধান্ত নেবে। যারা শিখবে তারা টাকা দিয়ে পড়বে। পাশাপাশি ফেলোশিপ থেকেও কিছু টাকা দেয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেছেন, ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে অবদান আছে সেটি স্পষ্ট। যদি এই তথ্যগুলো আমরা বের না করতাম আর জাতির পিতার লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ যদি বের না হতো তাহলে… ভাষা আন্দোলন থেকে তাকে তো মুছেই ফেলা হয়েছিল।
সভার শুরুতে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ।
বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠামণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, চিলচ্চিত্রের অভিনেতা নায়ক ফেরদৌস আহমেদ, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, কার্যনিবাহী কমিটির সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদ হুমায়ুন কবির। আলোচনা সভাটি পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান ।
মাহফুজা ২২-২