৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১১ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ব্রিটেনে ধর্মঘট; কার্যত অচল হয় লন্ডন-সহ একাধিক শহর

    সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সমন্বিত ধর্মঘট শুরু হয়েছে ব্রিটেনে। এতে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে সবকিছু।

    আল জাজিরার খবরে বলা হয়, বুধবার শুরু হওয়া এই ধর্মঘট আরও কিছুদিন চলতে থাকলে ভয়াবহ সংকটে পড়বে দেশটি। অর্ধলক্ষাধিক মানুষ ধর্মঘট শুরু করেছে, শিগগিরই এতে পাঁচ লাখ মানুষ যোগ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

    করোনা পরবর্তী সময় আর্থিক মন্দার মুখে পড়েছে ব্রিটেন। আর্থিক সংকটের জেরে আমজনতার জীবনযাত্রার মান পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সরব হয়েছে তারা। দাবি, কাজের পরিবেশ উন্নত করতে হবে। গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন ক্ষেত্রের কর্মীরা দফায়-দফায় কর্মবিরতি পালন করেছে। যার জেরে ধাক্কা খেয়েছে ব্রিটিশদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা।

    ব্রিটেন সরকারের উপর চাপ তৈরির চেষ্টা হয়েছে। এবার দিনভর ধর্মঘটের ঘোষণা করেন তাঁরা। অন্তত ৫ লক্ষ শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী, সিভিল সার্ভেন্ট, ট্রেন চালকরা এই ধর্মঘটে যোগ দেন। ধর্মঘটের জেরে বন্ধ ছিল ব্রিটেনে জাদুঘরও। কারণ সেখানকার কর্মীরাও ধর্মঘটে শামিল হন। তারপরও সরকার দাবি না মানলে, পরবর্তী সময় নার্স ও অ্যাম্বুল্যান্স চালকরাও যোগ দেবেন ধর্মঘটে, হুশিয়ারি শ্রমিক সংগঠনগুলির ।

    যদিও ব্রিটেন সরকারের দাবি, ইতিমধ্যে কর্মীদের একাংশের বেতন ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও সমস্য়ার সুরাহা হয়নি। কারণ, আর্থিক সংকট বাড়ছে। বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতি। ফলে এই বেতনে তাঁদের দিন কাটানো সম্ভব হচ্ছে না। আর তাই বেতন বৃদ্ধির দাবিতে পথে নামছে ব্রিটেনের প্রায় ৫ লক্ষ সরকারি কর্মী।

    সরকারের বেশকিছু সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে শুরুতে রাস্তায় নেমেছেন শিক্ষকরা। তারপর সেখানে যুক্ত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, সরকারি কর্মী, ট্রেনচালকসহ বিভিন্ন খাতে কাজ করা চাকরিজীবীরা।

    অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরতদের বেতন ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটেন সরকার। সংকুচিত করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা। শুধু তাই নয়, পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে শ্রমিকদের কণ্ঠরোধ করতে নতুন শ্রম আইন আনার সরকারি সিদ্ধান্ত। আইনটিতে বলা হয়েছে, কয়েকটি ক্ষেত্রে কোনোভাবেই ধর্মঘট করা যাবে না।

    ধর্মঘটের ফলে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে বেশিরভাগ রেল পরিষেবা। অনেক জায়গায় ফ্লাইট ওঠানামায় বিঘ্ন ঘটছে।পরিস্থিতি এতটাই জটিল হচ্ছে যে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত হতে বলেছে সরকার।

    ন্যাশনাল এডুকেশন ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি মেরি বুস্টেড বলেছেন, তার ইউনিয়নের শিক্ষকরা মনে করেন, তাদের ধর্মঘট করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।কারণ বেতন হ্রাসের অর্থ হলো অনেক লোক পেশা ছেড়ে যাচ্ছে, যা বাকিদের কাজ কঠিন করে তুলছে।

    শিক্ষামন্ত্রী গিলিয়ান কিগান সরকারের অবস্থানে অনড় রয়েছে বলেছেন, বেশি বেতন বৃদ্ধির দাবি মেনে নেওয়া শুধু মুদ্রাস্ফীতিকে বাড়িয়ে তুলবে।

    এক দশকের বেশি সময় এমন কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি ব্রিটেনবাসীকে। গত ১০ বছরে এত বড় বনধ হয়নি সে দেশে। শেষবার ২০১১ সালে এধরনের ধর্মঘট হয়েছিল ব্রিটেনে। সেবার পেনশন নিয়ে সরকার ও কর্মচারীদের মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। সে বছর পাবলিক সেক্টরের প্রায় ১০ লক্ষ কর্মী ধর্মঘটে শামিল হয়েছিলেন।

    মাহফুজা ২-২

     

     

     

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর