রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার বিকেল ৩ টা ১৫ মিনিটে নগরীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠের জনসভাস্থলে পৌঁছান তিনি। এ সময় মঞ্চ থেকে তাকে স্লোগানে স্লোগানে স্বাগত জানান জ্যেষ্ঠ নেতারা। প্রধানমন্ত্রীও হাত নেড়ে সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান।
রোববার দুপুর ১২টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যে দিয়ে জনসভা শুরু হয়। পবিত্র কোরান থেকে তেলাওয়াত করেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রেজোয়ানুল হক পিনু মোল্লাহ। গিতা পাঠ করেন আওয়ামী লীগ নেতা তন্ময়বকুমার শর্মা, বাইবেল পাঠ করেন খায়রুল বাসার টোটন ও ত্রিপিটক পাঠ করেন শ্রাবনী বড়ুয়া।
বর্তমানে স্থানীয় নেতারা ভাষণ দিচ্ছেন।এর আগে সকাল ১১টার দিকে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা হয়। গান পরিবেশন করেন বাউল শিল্পী শফি মন্ডল।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে প্রবেশ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পরে প্রধানমন্ত্রী জনসভা থেকে ২৬টি প্রকল্প উদ্বোধন করেন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ছয়টি প্রকল্পের।
এদিকে জনসভাস্থলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে লাখো মানুষ। নানান স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে মাদরাসার মাঠ ও আশেপাশের এলাকা। এর আগে সরদা পুলিশ অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠান শেষ করে জনসভাস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী।
মাদরাসা মাঠ উপচে নগরীর সাহেব-বাজার, আলুপট্টি, তাতাইমারী, রাজশাহী স্টেশনের রাস্তায় নেতাকর্মীদের ভিড় দেখে গেছে। এছাড়া নগরীর ১৩টি পয়েন্ট মাইকে জনসভার সম্প্রচার চলছে। সেখানেও মানুষের উপচে পড়া ভিড় আছে।
ভোর থেকেই জনসভা এলাকায় আসতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। জেলার বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি উপজেলা থেকেও মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসছেন। এ সময় তাদের স্লোগানে-স্লোগানে মুখর রাজশাহী নগরী। সকাল ৯টার দিকে খুলে দেওয়া হয় ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠ। মুহূর্তে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ঢলে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে সভাস্থল। জনসভাকে কেন্দ্র করে কয়েক ধাপে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
রোববার সকাল থেকে মানুষের উপস্থিতিতে দুপুর ১টার মধ্যে জনসভার মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, মাঠের আশেপাশের রাস্তাগুলোতেও নেই তিল পরিমাণ ঠাঁই। জনসভায় সভাপতিত্ব করছেন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মো. আলী কামাল। সঞ্চালনা করছেন, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা।
প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীর অন্তত ৩২টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এর মধ্যে রয়েছে- রাজশাহী তথ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজ, রাজশাহী আঞ্চলিক পিএসসি ভবন নির্মাণ কাজ, শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, বিকেএসপি আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ তলাবিশিষ্ট একাডেমি ভবন নির্মাণ, রাজশাহী ওয়াসা ভবন নির্মাণ, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ষষ্ঠ থেকে দশম তলা পর্যন্ত সম্প্রসারিত নির্মাণ কাজ, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের হেড কোয়ার্টার নির্মাণ, রাজশাহী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ভবন উদ্বোধন, মোহনপুর উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন, রাজশাহী সরকারি শিশু হাসপাতালের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি উদ্বোধন।
এছাড়াও শেখ রাসেল শিশুপার্ক, মোহনপুর রেলক্রসিং ফ্লাইওভার, নগরীর বন্ধগেট-সিটি বাইপাস পর্যন্ত অযান্ত্রিক যানবাহন লেনসহ চার লেন সড়ক নির্মাণ কাজ, নগরীর কল্পনা সিনেমা হল থেকে তালাইমারী সড়ক প্রশস্তকরণ ও সম্প্রসারণ কাজ, ভদ্রা রেলক্রসিং থেকে পারিজাত লেক হয়ে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল পর্যন্ত চার লেন সড়ক উদ্বোধন, হাইটেক পার্ক থেকে ঢালুর মোড় পর্যন্ত কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণ, পুঠিয়া-বাগমারা মহাসড়ক উন্নয়ন কাজ, রাজশাহী সমাজসেবা কমপ্লেক্স নির্মাণ, চারঘাট টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাল্টিপারপাস ভবন, রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিস, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের ৬ তলা বিশিষ্ট ছাত্রীনিবাস, রাজশাহী সদর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স উদ্বোধন, বাগমারার ভবানীগঞ্জ-কেশরহাট সড়ক, পদ্মা নদীর ড্রেজিং প্রকল্প, রাজশাহী পিটিআইয়ের বহুমুখী অডিটোরিয়াম নির্মাণ, চারঘাট ও বাঘায় পদ্মা নদীর বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্প।
মাহফুজা ২৯-১