শেষ হলো তিন দিনের জেলা প্রশাসক সম্মেলন। মঙ্গলবার সকালে শুরু হয় এই সম্মেলন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বক্তব্য ও নৈশভোজের মাধ্যমে শেষ হয় এই সম্মেলন।
এ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। গত বছরের মতো এবারও কার্য-অধিবেশনগুলো রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৩’ উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসকদের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে ব্যবস্থা গ্রহণসহ ২৫টি নির্দেশনা দিয়েছেন।
এরপর দুপুর ১২টা ১ মিনিট থেকে ১২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন ডিসিরা। এদিন সন্ধ্যায় বিআইসিসিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হয়।
সরকারের নীতি-নির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনা-সামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দু-বছর (২০২০ ও ২০২১) পর গত বছর ১৮ থেকে ২০ জানুয়ারি ডিসি সম্মেলন হয়েছিল।
সম্মেলনের প্রথম দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার পর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নৈশভোজ করেন ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনাররা। প্রথম দিন ১৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে চারটি কার্য-অধিবেশন হয়।
দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট ভবনে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও দিকনির্দেশনা গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসকরা। এরপর জাতীয় সংসদে স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় এবং নৈশভোজ করেন ডিসিরা। দ্বিতীয় দিন ২১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে সাতটি অধিবেশন হয়।
বৃহস্পতিবার তৃতীয় ও শেষ দিনে মোট ২০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে নয়টি কার্য-অধিবেশন হয় ডিসিদের। সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং নির্দেশনা গ্রহণ করেন ডিসিরা।
এবার সম্মেলনে মোট ২৬টি অধিবেশন হয়। এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্যঅধিবেশন ২০টি।
সম্মেলনে মোট ৫৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অংশগ্রহণ করে। কার্য-অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। কার্য-অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। অধিবেশনগুলো শেষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সাংবাদিকদের ডিসিদের প্রস্তাবের বিষয়ে তাদের অবস্থান ও দিকনির্দেশনা দেওয়া নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেছেন।
এবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ২৪৫টি প্রস্তাব পাওয়া গিয়েছিল। কার্য-অধিবেশনগুলোতে এসব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এগুলো ছাড়াও ডিসিরা তাৎক্ষণিক বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এবার ডিসি সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল- স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম জোরদারকরণ; ভূমি ব্যবস্থাপনা; আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম; স্থানীয় পর্যায়ে কর্ম-সৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন; সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কর্মসূচি বাস্তবায়ন; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্নেন্স; শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ; স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ; পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ; ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন; এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়।
মাহফুজা ২৬-১