নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭ জনে। কাঠমান্ডু থেকে পোখারার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ইয়েতি এয়ারলাইন্সের একটি এটিআর-৭২ প্লেন বিধ্বস্ত হয় সকালে। কাঠমাণ্ডু থেকে পোখরাগামী ওই বিমানে মোট ৭২ জন আরোহী ছিলেন। রোববার রয়টার্স ও এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে। উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছেন দেশটির সেনা সদস্যরাও।
নেপালের কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, রবিবার সকালে কাসকি জেলার পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং পুরনো বিমানবন্দরের মাঝামাঝি পাহাড়ি এলাকায় দুই ইঞ্জিনের এটিআর ৭২ উড়োজাহাজটি দুর্ঘটনায় পড়ে।বিমানটি কাঠমান্ডু থেকে পোখারা যাচ্ছিল।
এএফপি জানিয়েছে, বিমানে ৫৩ জন নেপালি এবং ১৫ জন বিদেশি যাত্রী ছিলেন। এদের মধ্যে পাঁচ জন ছিল ভারতীয়।
পুলিশ কর্মকর্তা অজয় কেসি রয়টার্সকে জানান, ‘আমরা ৩১টি মৃতদেহ হাসপাতালে পাঠিয়েছি এবং এখনও ৩৬টি মৃতদেহ ধ্বংসস্তুপ থেকে বের করছি।’ উদ্ধারকর্মীরা পর্যটন শহরটির বিমানবন্দরের কাছে দুই পাহাড়ের মাঝখানে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে অসুবিধায় পড়েছে। এ কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান তিনি।
রোববার সকাল ১০টা ৩৩ মিনিটের দিকে কাঠমাণ্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমানটি উড্ডয়ন করে। উড্ডয়নের ২০ মিনিটের মাথায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। ধারণা করা হচ্ছে, খারাপ আবহাওয়ার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন নেপালের বেসমারিক বিমান পরিবহণ কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইয়েতি এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র সুদর্শন বরতৌলা। তিনি এএফপিকে জানান, বিমানে ৬৮জন যাত্রী এবং ৪ জন ক্রু অবস্থান করছিলেন। উদ্ধারকাজ চলছে। যাত্রীদের মধ্যে বিদেশি নাগরিকও আছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন ভারতীয়, চারজন রাশিয়ান, একজন আইরিশ, দুজন দক্ষিণ কোরিয়ার, একজন অস্ট্রেলিয়ার, একজন ফরাসি ও একজন আর্জেন্টিনার নাগরিক রয়েছেন।
এর আগে নাবাহিনীর মুখপাত্র কৃষ্ণ ভাণ্ডারি রয়টার্সকে বলেছেন, ‘উড়োজাহাজটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আরও মৃতদেহ মিলবে বলে আমরা ধারণা করছি।’
স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ছোট একটি উড়োজাহাজ অবতরণের সময় হঠাৎ কাত হয়ে সরাসরি মাটির দিকে নেমে আসছে। বলা হচ্ছে, পোখারায় দুর্ঘটনায় পড়া বিমানের ভিডিও এটি। স্থানীয় টেলিভিশনে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ঘন কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে এবং উদ্ধারকর্মী ও স্থানীয় লোকজনকে বিমানটির ধ্বংসাবশেষের চারপাশে জড়ো হতেও দেখা যায়।
নেপালের সিভিল এভিয়েশনের মুখপাত্র জগন্নাথ নিরাউলা জানান, ৭২ জন আরোহী নিয়ে উড্ডয়ন করেছিল প্লেনটি। তিনি বলেন, পাহাড়ি এলাকা হলেও দুর্ঘটনার সময় আকাশ পরিষ্কার ছিল। তাহলে কেন এমন দুর্ঘটনা ঘটলো সেটি নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।
এক বিবৃতিতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ জানায়, রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত সংযোগ ছিল প্লেনটির। এরপর এটি বিধ্বস্ত হয়। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার ২৪ জানায়, প্লেনটি ১৫ বছরের পুরোনো ছিল।
এটিআর ৭২ হলো একটি বহুল ব্যবহৃত টুইন ইঞ্জিন প্লেন, যা এয়ারবাস ও ইতালির লিওনার্দোর যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হয়। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইট অনুসারে, ছয়টি এটিআর৭২-৫০০ প্লেন রয়েছে তাদের।
মাহফুজা ১৫-১