পাকিস্তানের পেশওয়ার শহরে একটি থানায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধের সময় তিন পুলিশ সদস্য মারা গেছেন। এ হামলার দায় স্বীকার করেছে কট্টরপন্থী ইসলামীগোষ্ঠী তেহেরি-ই-তালেবান পাকিস্তান -টিটিপি।
শনিবার গভীর রাতে ভারি অস্ত্রে সজ্জিত টিটিপি গোষ্ঠীর একটি দল এ হামলা চালায়। পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডন ও জিও নিউজ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এক বিবৃতিতে টিটিপির মুখপাত্র মুহাম্মদ খুরাসানি দাবি করেন, আমাদের মুজাহিদিনরা লেজার বন্দুক দিয়ে পেশোয়ারের দুটি পুলিশ চৌকিতে হামলা চালিয়েছেন। এতে তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি পুলিশের কাছ থেকে দুটি কালাশনিকভ, দুটি ম্যাগাজিন ও ৪৭ হাজার রুপিও ছিনিয়ে আনা হয়েছে।
পেশোয়ার পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা কাশিফ আব্বাসি জানান, শনিবার রাতে টিটিপির পাঁচ-সাতজন সদস্য উপশহর এলাকায় অবস্থিত সরবন্দ থানায় হ্যান্ড গ্রেনেডসহ আধুনিক অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। এ সময় ডেপুটি পুলিশ সুপার (ডিএসপি) বাদাবের সরদার হুসাইন, দুই প্রহরী ইরশাদ ও জেহানজেব মারা যান।
পুলিশ নিহতদের মরদেহ একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করেছে। দেশটির সিনিয়র পুলিশ সুপার কাশিফ আফতাব আব্বাসি হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পাকিস্তানের এসএসপি অপারেশনস বলছে, সন্ত্রাসীরা দুই থেকে তিন দিক থেকে থানায় হামলা চালায়। হামলায় অন্তত ছয় থেকে আটজন সন্ত্রাসী জড়িত ছিল। হামলার সময় থানায় অন্তত ১২ থেকে ১৪ জন পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তারা থানার চত্বরে পাঁচটি হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। চারটি গ্রেনেড নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে এবং একটি বিস্ফোরিত হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘হামলার পর সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। সন্ত্রাসী হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ বাহিনী।’
পুলিশের মুখপাত্র বলেন, ‘হামলার পর পুরো এলাকাটি ঘিরে রাখা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার বা হত্যার খবর পাওয়া যায়নি।
খাইবার পাখতুনখোয়ার পুলিশ প্রধান মোয়াজ্জাম জাহ আনসারি বলেন, পেশোয়ারের ডিএসপি সরদার হুসাইন থানায় প্রবেশের সময় গুলিবিদ্ধ হন। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মেহমুদ খান এ সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুলিশের এমন আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। হামলাকারীদের খুঁজে বের করে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
মাহফুজা ১৪-১