পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয় গত বছরের ২৫ জুন। সেতুর ডিটেইলড ইকোনমিক অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস প্রতিবেদন অনুযায়ী, টোল আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করা হয় বছরে ১৬শ কোটি টাকার কিছু বেশি। তবে প্রথম ছয় মাস ৯ দিনে টোল আদায় হয়েছে ৪১০ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক। এই সময়ে ২৮ লাখ যানবাহন পারাপার হয়েছে
গত ছয় মাসে টোল আদায় করা হয়েছে ৩৯৫ কোটি ২৮ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০ টাকা। আর যানবাহন পারাপার হয়েছে ২৭ লাখ ৩৭ হাজার ৫৯০টি। প্রতিদিনের গড় টোল আদায় ২ কোটি ১২ লাখ ৫১ হাজার ৯১৭ টাকা। প্রতিদিন গড়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে ১৪ হাজার ৭১৮টি।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মিত। এর পুরোটাই সরকারের কাছ থেকে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ঋণ হিসেবে নেয়। চুক্তির অনুচ্ছেদ ২ মোতাবেক ঋণের অর্থ প্রকল্প সমাপ্তির পর বার্ষিক ১ শতাংশ হারে সুদসহ ৩৫ বছরে ১৪০ কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া নকশা প্রণয়নের সময় নেওয়া ২১১ কোটি টাকার বিপরীতে পরিশোধ করতে হবে ৩৪০ কোটি টাকা।
পদ্মা সেতুর টোল আদায় করার জন্য জাজিরা প্রান্তের নাওডোবায় ও মুন্সীগঞ্জ প্রান্তের মাওয়ায় দুটি টোল প্লাজা স্থাপন করা হয়েছে। টোল পরিশোধ করে সেতুতে ওঠার জন্য ছয়টি করে বুথ রয়েছে। জাজিরা প্রান্তে টোল দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যানবাহন ঢাকার দিকে যায়। আর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে টোল দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে যায় যানবাহন।
পদ্মা সেতুর টোল আদায়ের কাজটি যৌথভাবে করছে পদ্মা সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ও কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান কোরিয়া এক্সপ্রেস করপোরেশন। তাদের পক্ষে মাঠপর্যায়ে এ কাজটি করছে বাংলাদেশের টেলিটেল কমিউনিকেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আর আদায় করা টোলের টাকা জমা হচ্ছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের হিসাবে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী রাজন বিশ্বাস বলেন, টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠান টেলিটেল প্রতিদিনের আদায়ের হিসাব বুঝিয়ে দেওয়ার পর সেতু কর্তৃপক্ষের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়ে যায়। আর সেতুর কোন প্রান্ত দিয়ে কত যানবাহন পারাপার হয়, কোন প্রান্তে কত টাকা টোল আদায় হয়, তা প্রতিদিন ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হয়।
পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টেলিটেল কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপক কামাল হোসেন বলেন, টোল প্লাজা সার্বক্ষণিক খোলা থাকে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা যানবাহন পারাপার হচ্ছে। মাঝে মাঝে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। তখন কিছু সময়ের জন্য টোল প্লাজার সামনে যানজট সৃষ্টি হয়।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী পদ্মা সেতুর টোলহার হলো–মোটরসাইকেলের টোল ১০০ টাকা (বর্তমানে চলাচল বন্ধ), বড় বাসের টোল ২ হাজার ৪শ টাকা, মাঝারি ধরনের বাসের টোল ২ হাজার টাকা, কার ও জিপের ৭৫০ টাকা, চার এক্সেল ট্রেইলার ৬ হাজার টাকা, মাইক্রোবাস ১৩শ টাকা এবং মিনিবাসের (৩১ সিট বা তার কম) টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪শ টাকা।
মাহফুজা ৫-১