২৪শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
৭ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    তুষারঝড়ে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৮ জন

    তুষারঝড়ে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৮ জন। সোমবার বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, উত্তর আমেরিকাজুড়ে তুষারঝড়ের কবলে পড়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার পর্যন্ত ১৯ জনের প্রাণহানির কথা জানায় মার্কিন প্রশাসন। ঝড়ের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিউইয়র্ক এর  বাফেলো শহর। এ শহর ও শুধু এখানেই মারা গেছেন সাতজন। ঝড়ের প্রভাবে বাফেলোর বেশকিছু জায়গা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তবে রোববার থেকে ওইসব এলাকায় ধীরে ধীরে বিদ্যুৎসংযোগ চালু করা হয়েছে।

    আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রাস্তায় কোথাও ৮ ফুট, কোথাও বা ১০ ফুট পুরু বরফের আস্তরণ জমে গেছে । আমেরিকার এই ভয়ঙ্কর তুষারঝড়কে বলা হচ্ছে ‘সাইক্লোন বম্ব’। এর ফলে দেশের নানা প্রান্তে হিমাঙ্কের ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি নীচে নেমে গেছে তাপমাত্রা। ঠান্ডায় প্রায় জমে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাস্তাঘাটের অবস্থা এমন যে, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও দুর্যোগ কবলিতদের উদ্ধারে বাধা পাচ্ছে।

    তুষারঝড়ের মাঝে বড়দিনে নাগরিকদের ঘরের বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যতটা সম্ভব বাড়ির ভেতরেই থাকতে বলা হয়েছে সবাইকে। খুব জরুরি দরকার না হলে কেউ রাস্তায় বেরোচ্ছেন না।

    তবে ঝড়ের কারণে এখনো স্বাভাবিক হয়নি দেশটির বিমান চলাচল। অসংখ্য ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় পরিবারের সঙ্গে বড়দিন উদযাপনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন অনেকেই।

    নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল রোববার সন্ধ্যায় বলেন, বাফেলোতে আট ফুট (২.৪ মিটার) তুষারপাত হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট জনজীবনকে হুমকির মুখে ফেলেছে। খুব বিপজ্জনক জীবন-হুমকিপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে বাফেলোর বাসিন্দারা।

    বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বাফেলোতে তুষারঝড়ে গাড়ির ভেতরে আটকা পড়ে মারা গেছেন কয়েকজন। তুষারআবৃত রাস্তা থেকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে কয়েকজনকে। বাফেলো ছাড়াও ভেরমন্ট, ওহাইও, মিসৌরি, উইসকনসিন, কানসাস এবং কলোরাডোতে ঠান্ডা ও ঝড়ে মানুষ মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

    বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ঠাণ্ডা পড়েছে পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্য মন্টানাতে। এখানে তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নিচে নেমে গেছে।

    এ তুষার ঝড়ের তীব্র প্রভাব পড়েছে পাশের দেশ কানাডাতেও। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্য লাগোয়া কানাডার বিভিন্ন অংশেও হয়েছে ভারি তুষারপাত।

    ঝড়ের কারণে কানাডার কিউবেক ও ওন্টারিও প্রদেশের জনজীবনও স্থবির হয়ে পড়েছে।স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, রোববার কিউবেকের ১২ হাজার মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না। বিদ্যুৎসংযোগ স্বাভাবিক হতে কয়েকদিন সময় লেগে যেতে পারে।

    শনিবার তুষার ঝড় ও ঠান্ডার কবলে দেশ দুটিতে কয়েকদিনে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। একই দিনে জাপানের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন অংশে ভারি তুষারপাতে অন্তত ১৩ জন প্রাণ হারান, আহত হন ৮০ জনেরও বেশি।

    ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়ার লেক-জুর্স এলাকায় তুষারধসে চাপা পড়া ১০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে ইনসব্রুক নামের একটি আঞ্চলিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

    রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ৩টার সময় লেচ-জুয়ার্স রিসোর্ট এলাকার স্কি ট্রেইলে এ তুষারধসের ঘটনা ঘটে। সোমবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

    অস্ট্রিয়ার সরকারি কর্মকর্তারা জানান, উদ্ধারকাজে অংশ নেন অন্তত ২০০ জন উদ্ধারকারী। সেই সঙ্গে কয়েকটি হেলিকপ্টার ও উদ্ধারকারী কুকুরের মাধ্যমে চলে নিখোঁজদের অবস্থান শনাক্তের কাজ।

    মাহফুজা ২৬-১২

     

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর