রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সাদা পোশাকেও পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
রোববার দুপুরে রসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আবদুল বাতেন বলেন, রসিক নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। আজ রাত ৮টা থেকে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী সব ধরনের নির্বাচনী মাইকিং ও মধ্যরাত থেকে প্রচার প্রচারণা বন্ধ হবে। এছাড়া আজ রাত ১২ টার পর থেকে আগামী ২৭ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত রসিক এলাকায় মোটরসাইকেল, ইজিবাইকসহ ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার ও নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত যানবাহন ব্যতীত সব প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
তিনি আরও বলেন, এবারে রসিক ভোট ইভিএম-এর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। ভোটদানের ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে সব ওয়ার্ডে মকভোটিংসহ জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, রসিকে ২২৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনের তুলনায় অধিক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে অস্ত্রসহ পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন থাকবে। অস্ত্র ছাড়াও পুলিশ, বিজিবি ও আনছার সদস্যরাও সার্বক্ষণিক কেন্দ্রে অবস্থান করবে। এর বাহিরে পুরো রসিক এলাকায় ১১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। আর টহল টিমের পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, ভোটার ছাড়া অন্য কেউ ভোট কক্ষের গোপন বুথে প্রবেশ করতে পারবেন না। প্রবেশ করলেই সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়বে এবং তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে দুই-একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মেয়র প্রার্থীদের প্রচারণা ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রার্থীদের মাঝে বাকযুদ্ধ থাকলেও প্রচারণা ঘিরে ছিল না কোনো উত্তেজনা। উৎসবের প্রচারণায় ঘনিয়ে আসা ভোট শেষ পর্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে এমনটাই প্রত্যাশা নগরবাসীর।
এবার সাতটি রাজনৈতিক দলের সাতজনসহ নয়জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। জামায়াতে ইসলামীর এক নেতা তফসিল ঘোষণার আগে থেকে প্রচারণা চালানোর পর মনোনয়নপত্র কিনলেও শেষ পর্যন্ত তিনি জমা দেননি।
তৃতীয়বারের মতো রংপুর সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবার ভোটার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে চার লাখ ২৬ হাজার ৪৬৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ১২ হাজার ৩০২ জন এবং নারী ভোটার দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন।
এবার মেয়র পদে জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) শফিয়ার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল, খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল রাজু, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম খোকন, বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির আবু রায়হান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেহেদী হাসান বনি ও লতিফুর রহমান মিলন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এছাড়া সংরক্ষিত ১১টি ওয়ার্ডে ৬৮ এবং ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৮৩ জন কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন
তৃতীয় দফায় ২৭ ডিসেম্বর ২২৯টি কেন্দ্রের ১৩৪৯টি কক্ষে সকাল সাড়ে আটটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
মাহফুজা ২৫-১২