১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
১৯শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    বিএনপি কি দেশ ও জনগণের জন্য ভালো কিছু করছে, যার মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে -প্রধানমন্ত্রী

    বিএনপি কি দেশ ও জনগণের জন্য ভালো কোন কিছু করছে, যার মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

    ২২তম জাতীয় সম্মেলনের আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা।

    যেসব বুদ্ধিজীবী দেশের উন্নয়ন চোখে দেখেন না, তারা ‘প্রতিবন্ধী বুদ্ধিজীবী’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি বলেন, যাদের চোখ আছে, তারা উন্নয়ন দেখবেন। কিছু প্রতিবন্ধী বুদ্ধিজীবী কোনো উন্নয়ন দেখেন না। যারা উন্নয়ন চোখে দেখেন না, তারা প্রতিবন্ধী বুদ্ধিজীবী। তারা যে কোনোভাবে আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে চান। গণতান্ত্রিক ধারায় দেশ চললে তারা হতাশ হন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনও প্রশ্ন তুলতে পারবে না। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছিল। আর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল। বিএনপি কি দেশ ও জনগণের জন্য ভালো কোন কিছু করছে, যার মাধ্যমে তাদের প্রতি জনগণের আস্থা-বিশ্বাস গড়ে তুলবে।

    তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু করেছে। জিয়াউর রহমান দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার পর থেকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য প্রহসনমূলক হ্যাঁ/না ভোট এবং সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছিল। তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনমূলক নির্বাচন করেছিলেন, যাতে কোনও রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি।

    সরকারপ্রধান বলেন, দেশের মানুষ ভোট কারচুপি কখনও মেনে নেয়নি বলেই নির্বাচনের দেড় মাসের মধ্যে আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি সরকারের পতন ঘটিয়েছিল। ২০০৬ সালে ১.২৩ কোটি জাল ভোটারের তালিকা নিয়ে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়াস চালালে তা বাতিল করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসে।

    শেখ হাসিনা বলেন আওয়ামী লীগ কখনো ভোট ও জনগণের সমর্থন ছাড়া ক্ষমতায় আসে না। সামরিক শাসনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে কেউ সাহায্য করেনি। দেশের ইতিহাসে আওয়ামী লীগই একমাত্র দল, যারা ২০০১ সালে পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ করে শান্তিপূর্ণভাবে দেশের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দল কখনই চায় না কোনও গণতান্ত্রিক শক্তি ক্ষমতায় এসে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করুক। আওয়ামী লীগ জনগণের দল, কারণ এটি জনগণের মধ্য থেকে গঠিত হয়েছে। বিএনপি সামরিক স্বৈরশাসকের পকেট থেকে গঠিত হয়েছে।

    তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার দেশবাসীকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং দিয়েছে। খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ তাদের শীর্ষ নেতারা অনেক ফৌজদারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, জনগণ কেন বিএনপিকে ভোট দেবে। তারেক রহমান ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ আগস্ট ২০০৪ গ্রেনেড হামলা মামলা এবং অর্থ পাচার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজাপ্রাপ্ত এবং এতিমের অর্থ আত্মসাতের দায়ে খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত। অবৈধভাবে উপার্জিত ও লুটপাট করা অর্থ খরচ করে বিদেশে অবস্থান করে তারেক জিয়া এখন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।

    তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের জন্য আন্দোলনের নামে অগ্নিসংযোগ করে মানুষকে হত্যা ও আহত করার সংস্কৃতির সূচনা করেছে।

    আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সরকারের আমলের উন্নয়নের পরিসংখ্যান তুলনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তার দল যখনই ক্ষমতা আসে তখনই দেশ এগিয়ে যায় আর বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশ পিছিয়ে যায়।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে মাথাপিছু আয় ছিল ৩০০ মার্কিন ডলারের বেশি যা এখন ২৮২৪ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর মাত্র ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেয়েছিল যা তৎকালীন আ.লীগ সরকার ৪৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্রের কারণে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারেনি। পরে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি সরকার ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত থেকে বাংলাদেশকে আবার খাদ্য ঘাটতির দেশে পরিণত করে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩০০০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনে। দেশে এখন ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।

    এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও কাজী জাফরুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আগামী ২৪ ডিসেম্বর রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

    মাহফুজা ২২-১২

     

     

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর