১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা-ভালোবাসার ফুলে ভরে উঠেছে স্মৃতিসৌধের বেদি

    মহান বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা সবার জন্য উন্মুক্ত হয়েছে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। শ্রদ্ধা নিবেদন ও আনুষ্ঠানিকতা শেষে সকাল ৭টার দিকে সৌধ এলাকা ত্যাগ করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। এরপরই ঢল নামে সাধারণ মানুষের।

    তাদের স্মৃতিসৌধ এলাকা ত্যাগের পরেই সৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় সবার জন্য। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে পুরো এলাকায় নামে লাখো মানুষের ঢল। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা-ভালোবাসার ফুলে ভরে উঠে স্মৃতিসৌধের বেদি।

    এতে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বয়সী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বেদিতে ফুল দিয়েছেন। শহিদদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, আবেগ জানিয়েছেন তারা।

    এ ছাড়া শ্রদ্ধা জানাতে আসেন রাজনীতিক, কূটনীতিক, সমাজকর্মী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী শিল্পী-বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, পেশাজীবী, শ্রমিক, শিক্ষার্থী, সর্বোপরি সাধারণ মানুষ। এতে ফুলে ফুলে শ্রদ্ধার পুষ্পাঞ্জলিতে ঢেকে যায় বেদি।

    সকাল থেকেই নানান রঙে সাজসজ্জা করে ফুল দিতে এসেছেন অনেকেই। তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন শ্রেণির অনেককে দেখা গেল, স্মৃতিস্তম্ভ পেছনে রেখে একা, যুগল, দলবেঁধে মুঠোফোনে সেলফি তুলছেন।

    এদিকে, ভিভিআইপি যাতায়াতের কারণে ফজরের আগ থেকেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানবাহন ও মানুষের চলাচল বন্ধ করা হয়। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধ ত্যাগ করার পর মহাসড়ক ছেড়ে দেওয়া হয়।

    এর আগে, সকাল সাড়ে ৬টার পর জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রবেশ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পৌনে ৭টায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রবেশ করে মূল বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।

    প্রথমে রাষ্ট্রপতি জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

    বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকস দল এ উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে সই করেন রাষ্ট্রপতি ও সরকার প্রধান।

    পরে রাষ্ট্রপতি স্মৃতিসৌধ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলেও দলের সভাপতি হিসেবে দলীয় নেতাদের সঙ্গে আরও একবার জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।

    পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তিন বাহিনীর প্রধান, ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার এবং ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসকসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

    এর আগে, দিবসটি পালনে জাতীয় স্মৃতিসৌধকে প্রায় ১ মাস ধরে ধুয়ে-মুছে, রং-তুলির আঁচড় ও রঙ-বেরঙের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। সেই সাথে স্মৃতিসৌধে আগত দর্শনার্থীসহ সকলের নিরাপত্তা ও কোনও প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এখানকার পুলিশ ও আনসার ক্যাম্পকে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক অবস্থানে রাখা হয়েছে।

    এ বিষয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, দর্শনার্থীসহ সকলের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ওয়াচ-টাওয়ার দিয়েছি। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করছে। আমাদের প্রায় সাড়ে তিন হাজার পুলিশ সদস্য এই সৌধ এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। আমরা সৌধ এলাকায় নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দিয়েছি। সাভারের আমিনবাজার থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

    মাহফুজা ১৬-১২

     

     

     

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর