সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে হারানোর পর লিওনেল মেসি নিশ্চিত করলেন, ফাইনালই হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপে তার শেষ ম্যাচ। আর্জেন্টাইন মিডিয়াকে মেসি বলেন, ‘আমি খুব খুশি, এটা অর্জন করতে পেরে এবং ফাইনাল খেলে আমার বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ করতে পেরে।’
আর্জেন্টিনার গণমাধ্যম দারিও দেপোর্তিভো ওলেকে মেসি জানান, কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলে আমি বিশ্বকাপ যাত্রার ইতি টানব। আমরা মাত্র এক ধাপ দূর আছি। আমরা আমাদের সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে এবার বিশ্বকাপ জয় করব।
২০২৬ বিশ্বকাপ হবে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডার যৌথ আয়োজনে। ওই সময় মেসির বয়স হবে ৩৯ বছর। আরেকটি বিশ্বকাপ খেলার কথা মোটেও ভাবছেন না ৩৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড, ‘পরেরটা অনেক বছর পর। আমি মনে করি না আবার খেলতে পারবো। এভাবে শেষ করতে পারা দুর্দান্ত।’
২০১৪ সালের পর প্রথমবার বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনা। আগামী রোববার ৩৬ বছরের ট্রফিখরা ঘুচানোর সুযোগ। কাতারে পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলতে নেমে আর্জেন্টিনার সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ম্যাচে খেলা, গোল করা ও অ্যাসিস্টের রেকর্ড গড়েছেন। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ২৫ ম্যাচ খেলার রেকর্ডে জার্মান কিংবদন্তি লুথার ম্যাথিউজকে স্পর্শ করেন তিনি। এ ছাড়া আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ ১১ গোল করায় গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকেও ছাড়িয়ে যান মেসি।
মেসি বলেন, ‘এটা দারুণ (রেকর্ড)। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দলের উদ্দেশ্য অর্জন করা, যেটা সবচেয়ে সুন্দর। আমরা আর একধাপ দূরে, কঠিন লড়াই করেছি। আমরা এবার লক্ষ্য পূরণে সর্বোচ্চটা দেবো।’
টানা ৩৬ ম্যাচ অজেয় আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে স্বাভাবিকভাবেই ফেভারিট ছিল। কিন্তু সৌদি আরবের কাছে হার বড় ধাক্কা দিয়েছিল। এরপর গ্রুপ পর্বের প্রতিটি ম্যাচ ফাইনাল হয়ে দাঁড়ায়। একে একে সব বাধা ডিঙিয়ে ফাইনালেও উঠে গেলো আর্জেন্টিনা। ২০১৪ সালের পর আবারও স্বপ্নপূরণের খুব কাছে অধিনায়ক লিওনেল মেসি।
আগামী রোববার লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনা ফাইনাল খেলবে। মঙ্গলবার ফাইনালের ভেন্যুতেই ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে হারায় তারা। তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিশ্চিত করতে বুধবার মুখোমুখি হচ্ছে ফ্রান্স ও মরক্কো।
৩৫ বছর বয়সী মেসি ৩৪তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন। এরপর দুই অর্ধে জুলিয়ান আলভারেজ করেন দুটি গোল। প্রথমটি একার প্রচেষ্টায় করেন। আর দ্বিতীয় গোলে জাদুকরী অবদান রাখেন মেসি।
ম্যাচ শেষে মেসি বলেছেন, ‘আমি বলবো যে প্রথম ম্যাচ ছিল আমাদের সবার জন্য কঠিন ধাক্কা। কারণ আমরা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত ছিলাম। এভাবে বিশ্বকাপ শুরু করা ছিল হতাশার, আমরা ভাবিনি যে সৌদি আরবের কাছে হারতে পারি। পুরো স্কোয়াডের জন্য ছিল একটা অ্যাসিড টেস্ট কিন্তু এই স্কোয়াড প্রমাণ করেছে আমরা কতটা শক্তিশালী।’
প্রতিটি ম্যাচ ফাইনাল ধরে খেলেছেন মেসি, ‘আমরা অন্য ম্যাচগুলো জিতলাম। আমরা যা করেছি তা ছিল খুব কঠিন, কারণ প্রতিটি ম্যাচ ছিল ফাইনাল এবং আমরা সতর্ক ছিলাম যদি আমরা না জিততে পারি তাহলে আমাদের জন্য জটিল হয়ে যাবে।’
মেসি বলেন ‘ভেতরে ভেতরে আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে আমরা পারবো। কারণ আমরা জানতাম দল হিসেবে আমাদের সামর্থ্য কী। আমরা প্রথম ম্যাচ হারলাম, কিন্তু এটা আমাদের আরও শক্তিশারী করে তুলেছিল।’
মেসি, ‘চলুন এই মুহূর্ত উপভোগ করি। এখানে ও আর্জেন্টিনায় আমাদের ভক্তদের আনন্দ দেখতে পারা দারুণ। ফাইনালে আমাদের যা আছে তার সবকিছু দিতে যাচ্ছি কিন্তু আমরা যা অর্জন করেছি সেটাও উপভোগ করতে হবে। আমি এই মুহূর্ত উপভোগ করছি। আমরা ম্যাচের আগেই শক্তিশালী অনুভব করছি, এমনকি আগের ম্যাচ থেকে। যদিও ম্যাচটা সহজ ছিল না। আমরা ক্লান্ত ছিলাম কিন্তু এই দল এই ম্যাচে খেলার জন্য মাঠে পূর্ণ শক্তি নিয়ে নেমেছিল।’
মাহফুজা ১৪-১২