বিশ্বকাপে এবারই প্রথম নক আউট পর্বে আর্জেন্টিনাও অস্ট্রেলিয়া মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। শনিবার রাত ১টায় আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে মাঠে নামতে যাচ্ছে দুই দল ।
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হোঁচট খাওয়ার পর আলবিসেলেস্তেদের জন্য প্রতিটি ম্যাচই নক আউট! মেক্সিকোর বিপক্ষে জিততেই হবে এমন ম্যাচে ২-০ গোলে জয় পায় দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে পোল্যান্ডের বিপক্ষেও জয় দরকার ছিল। সেই ম্যাচেও ২-০ গোলে জয়।
দুই দল এখন পর্যন্ত সাত ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে প্রত্যাশিতভাবেই আর্জেন্টিনার জয় বেশি। পাঁচ ম্যাচ জিতেছে তারা। একটি ম্যাচ অস্ট্রেলিয়া ড্র করেছে। অপর ম্যাচ তারা জিতেছে। তবে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপে দুই দল নক আউট পর্বে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে দুই দল।
দুই দল এখন পর্যন্ত সাত ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে প্রত্যাশিতভাবেই আর্জেন্টিনার জয় বেশি। পাঁচ ম্যাচ জিতেছে তারা। একটি ম্যাচ অস্ট্রেলিয়া ড্র করেছে। অপর ম্যাচ তারা জিতেছে। তবে বিশ্বকাপে এবারই প্রথম দুই দল নক আউট পর্বে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।
যদি পরিসংখ্যান এবং শক্তির বিচার করতে হয় তাহলে অবশ্যই আর্জেন্টিনা বেশি শক্তিশালী। বিশেষ করে শেষ ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা যেভাবে একচেটিয়ে খেলেছে সেই আত্মবিশ্বাসে ও খেলার ধার ধরে রাখতে পারলে অস্ট্রেলিয়ার ছন্নছাড়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আলবিসেলেস্তেদের পারফরম্যান্সে শেষ ম্যাচে উল্লেখযোগ্য উন্নতি ছিল, মেসির ছায়া থেকে বের হয়ে এক দল হয়ে পারফর্ম করা।
প্রথমার্ধে মেসির পেনাল্টি মিসের পরও গোটা দল এক হয়ে পারফর্ম করে ম্যাচ জিতিয়েছে। দুই তরুণ তুর্কী ম্যাক অ্যালিস্টার ও জুলিয়ান আলভারেস গোল করে জিতিয়েছেন ম্যাচ। বাকিরাও রেখেছেন অবদান। কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করতে এমন পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি চাইবেন কোচ লিওনেল স্কালোনি।
ম্যাচের আগে শুক্রবার স্কালোনি বলেছেন,‘ছেলের কোন কাজটা গুরুত্বপূর্ণ তা এরই মধ্যে বুঝে গেছে। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোতে চাচ্ছি। শেষ দুই ম্যাচ আমরা দলগতভাবে খেলে ভালো ফল পেয়েছি। সামনেও আমাদের একই পরিকল্পনা থাকবে। পোল্যান্ডের বিপক্ষে যে মেজাজে ছিলাম। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও সেরকমই আছি। আমাদের মাঠে নামতে হবে এবং ভালো ফুটবল খেলতে হবে।’
অস্ট্রেলিয়া শেষবার দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেছে ২০০৬ সালে। ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে টানা তিন আসরে প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছিল। এবার ‘ডি’ গ্রুপের প্রথম ম্যাচে ফ্রান্সের কাছে ৪-১ ব্যবধানে উড়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে তিউনিসিয়াকে ১-০ এবং ডেনমার্ককে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে শেষ ষোলোয় জায়গা করে তারা।
সেই ১৯৮৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে প্রথম দেখায়ই ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। এরপর আর সকারুজরা সুবিধা করতে পারেনি কখনও। ১৯৯৩ সালের বিশ্বকাপে তারা একবার ১-১ ড্র করেছিল।
সবশেষ চার দেখায় একবারও আর্জেন্টিনাকে হারাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। এর মধ্যে সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল ১৫ বছর আগে। ২০০৭ সালে সেই প্রীতি ম্যাচে ১-০ গোলে জেতে আর্জেন্টিনা।
১৯৯৩ বিশ্বকাপেই দুইবার দেখা হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া-আর্জেন্টিনার। তার মধ্যে একটি ম্যাচ ড্র হয়েছে, একটিতে ১-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আলবিসেলেস্তে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে হারের পর
যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে লিওনেল স্কালোনির দল, অস্ট্রেলিয়ার জন্য কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠা কঠিনই হবে। দুরন্ত ছন্দে থাকা আর্জেন্টিনা এই ম্যাচে পরিষ্কার ফেবারিট।
অস্ট্রেলিয়া যে মেসিদের এক চুল পরিমাণ ছাড় দেবে তা বোঝা গেল দলের ডিফেন্ডার মিলোস ডেগেনেক কণ্ঠে,‘এটা ৯০ মিনিটের খেলা, হয়তো বা ১২০ মিনিটের। এটা নকআউট ম্যাচ। কেউ আমাদের এখানে প্রত্যাশা করেনি, আমরা সবকিছু নিংড়ে দিবো তাদের বিপক্ষে, আমাদের কোনও চাপ নেই। এটা কঠিন ম্যাচ হতে যাচ্ছে, খেলতে হবে সম্ভবত সেরা ফুটবলারের বিরুদ্ধে। কিন্তু এটা ১১ জনের বিরুদ্ধে ১১ জনের খেলা। ওদের দলে ১১ জন মেসি নেই, একজনই।’
আমি আর্জেন্টিনার জার্সি পরতে পেরে গর্বিত এবং আমি যে দেশটিতে জন্মগ্রহণ করেছি তাকে ভালোবাসি। আমি মরার আগ পর্যন্ত জার্সিটির সম্মান রক্ষা করব এবং সর্বদা নিজের সর্বোচ্চটুকু উজার করে দিতে প্রস্তুত। কখনও কখনও জিনিস পক্ষে আসবে, কখনও বিপক্ষে। কিন্তু আমি কখনো লুকিয়ে যাবো না। এটাই আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে।’প্রি কোয়ার্টারের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে গণমাধ্যমে এভাবেই নিজের ভাবনা প্রকাশ করেন আর্জেন্টিনার খেলোয়াড় রদ্রিগো ডি পল।
আজ শুরু হবে ষোলো দলের চূড়ান্ত শিরোপার লড়াই। এরপর ধাপে ধাপে আট, চার, দুয়ের লড়াই…১৮ ডিসেম্বর হবে শিরোপার ফয়সালা।
মাহফুজা ৩-১২