বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো গ্রাহক (ভোক্তা) পর্যায়ে ১৯-২০ শতাংশ হারে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো), ঢাকা ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ (বিপিডিবি) বেশ কয়েকটি কোম্পানি দাম বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বরাবর প্রস্তাব পাঠিয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিইআরসি।
পিডিবি গ্রাহক পর্যায়ে ১৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ দাম বৃদ্ধির আবেদন করেছে । গ্রাহক পর্যায়ে ২০ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) ১৯ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। ঢাকা ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ২০ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ার পর গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি। বিদ্যুতের দাম দ্রুত না বাড়ালে আমাদের লোকসান গুণতে হবে এবং সে কারণে দাম বাড়ানো আবেদন করা হয়েছে।
নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) এমডি জাকিউল ইসলাম বলেন, বিতরণের ব্যয় হিসাব করে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম যতটুকু বাড়ানোর প্রয়োজন, সেটুকুই প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিইআরসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম ১০ শতাংশ বাড়লে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১২-১৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রয়োজন।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এম শামসুল আলম বলেন, এই মুহূর্তে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। খুচর পর্যায়ে দাম বাড়ানো হলে এর প্রভাব বিভিন্ন সেক্টরে পড়বে।
বাংলাদেশ অ্যানার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কমিশনের সদস্য আবু ফারুক বলেন, বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো দাম বাড়ানোর প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে শিগগিরই গণশুনানি হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেবে।
গত ২১ নভেম্বর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম আপাতত বাড়ছে না এবং এটি নিয়ে গ্রাহকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন ২৮ নভেম্বর মন্ত্রিসভা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন করার পর ১ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এখন থেকে বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম পুনর্নির্ধারণ করতে পারবে সরকার।
১৪ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে নয়বার। এ সময় পাইকারি পর্যায়ে ১১৮ শতাংশ ও গ্রাহক পর্যায়ে ৯০ শতাংশ বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। সবশেষ দাম বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যা ওই বছরের মার্চ থেকে কার্যকর হয়। ওই সময় পাইকারি পর্যায়ে ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ বাড়ানো হয় দাম। একই সময়ে খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ানো হয় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
মাহফুজা ৩-১২