৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির ২৫ বছর আজ

    পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির ২৫ বছর আজ। । ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে তিন পার্বত্য জেলায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান ঘটে।

    চুক্তিতে সরকার পক্ষে স্বাক্ষর করেন তৎকালীন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং জনসংহতি সমিতির পক্ষে স্বাক্ষর করেন জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লার্মা ওরফে সন্তু লার্মা।

    দিবসটিতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন।

    বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সর্বত্র শান্তি বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের, দারিদ্র্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো, ইনশাল্লাহ।

    পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির ২৫ বছর পূর্তি হচ্ছে আজ। এই উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে তিন পার্বত্যজেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলায় গণসমাবেশ ও র্যালির আয়োজন করেছে। রাঙামাটিতে সকাল ১০ টায় কুমার সমিত রায় জিমনেসিয়াম চত্ত¡রে গণসমাবেশ করবে জনসংহতি সমিতির জেলা কমিটি। এছাড়া আলোচনা সভার আয়োজন করেছে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং জেলা আওয়ামী লীগ।

    পার্বত্য শান্তিচুক্তি হওয়ায় সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির দীর্ঘদিন পর পাহাড়ে শান্তি ফেরার পথ উন্মুক্ত হয়। প্রাথমিকভাবে জনসংহতির নেতৃত্বাধীন শান্তিবাহিনীর সদস্যরা অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। সরকারও তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। সাময়িকভাবে পাহাড়ে রক্তের খেলা, অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ হয়। কিন্তু বছর যেতে না যেতে চুক্তির বিরোধিতা করে জনসংহতির একটি অংশ ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (্ইউপিডিএফ) গঠন করে। এরপর শুরু পাহাড়ে দুই আঞ্চলিক দলের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। ২০০১ সালে তিন বিদেশি অপহরণের মাধ্যমে শুরু হয় পাহাড়ে অপহরণ ‘বাণিজ্য’। পরে ২০০৭ সালে জনসংহতি সমিতি থেকে বের হয়ে ২০১০ সালে আরেক আঞ্চলিক সংগঠন জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) সৃষ্টি হয়। ২০১৭ সালে এসে ইউপিডিএফ থেকে বের হয়ে আরেকটি সংগঠনের জন্ম হয়, যেটা ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) নামে পরিচিত।

    তবে পার্বত্য চুক্তির পর পাহাড়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নেরও ছোঁয়া লাগে। বিশ্ববাসীর কাছে পার্বত্যাঞ্চলের পর্যটনও ব্যাপক সুনাম অর্জন করে। এ-সময়ে পাহাড়ে প্রচুর যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ২৪ বছরে প্রচুর বিদ্যালয়, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সাধারণ মানুষের উন্নয়নে সরকারও প্রচুর কাজ করে গেছে।

    পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চুক্তির প্রধান কয়েকটি শর্ত পূরণ হয়নি এখনো। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি, উপজাতীয় অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা, প্রশাসনে বেসামরিকীকরণ করা, আঞ্চলিক পরিষদ এবং পার্বত্য জেলা পরিষদকে ক্ষমতায়ন করা

    বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চুক্তির আগে জেলায় ১২ হাজার পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় থাকলেও বর্তমানে অর্ধ লক্ষাধিক পরিবার বিদ্যুতের সুবিধা গ্রহণ করছে। দুর্গম বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়িতে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

    মাহফুজা ২-১২

     

     

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর