১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

    সর্বশেষ খবর

    ঐন্দ্রিলা শর্মা চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন

    ভারতীয় টিভি অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন।রোববার  দুপুর ১২টা ৫৯ মিনিটে তিনিহাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । তার বয়স হয়েছিল ২৪ বছর।  দীর্ঘ ১৯ দিন রোগের সঙ্গে লড়াই শেষে অনন্ত যাত্রার মিছিলে শামিল হলেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। এ খবর জানায় হিন্দুস্তান টাইমস ।

    ১ নভেম্বর রাতে স্ট্রোক হলে ঐন্দ্রিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তারপর আর জ্ঞান ফিরেনি তার। ঐন্দ্রিলার গেল  কয়েক দিন ধরে শারীরিক অবস্থা অস্থিতিশীল ছিল; রক্তচাপ ওঠানামা করছিল।

    ১৬ নভেম্বর সকালে প্রথম হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনিএবং  সিপিআর দিয়ে তাকে ফিরিয়ে আনেন চিকিৎসকরা। কিন্তু শনিবার  দিবাগত রাতে অন্তত ১০ বার হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি এবং তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। আর তিনিসেখানেই মারা যান ।

    ক্যানসারসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে ঐন্দ্রিলা দীর্ঘদিন লড়াই করেছেন। হাসপাতালে সার্বক্ষণিক পাশে ছিলেন প্রেমিক অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী।

    ঐন্দ্রিলার অবস্থা সংকটজনক দেখেও আশায় বুক বেঁধেছিল পরিবার ও তার প্রেমিক। সেই আশায় ভর করেই সব্যসাচী লিখেছিলেন, ‘নিজের হাতে করে নিয়ে এসেছিলাম, নিজের হাতে ওকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাব। এর অন্যথা কিছু হবে না।’ কিন্তু ঐন্দ্রিলা পরপারে পাড়ি জমালেন

    ১৫ নভেম্বর ঐন্দ্রিলার সিটি স্ক্যান এ  জানা যায়, স্ট্রোকের পর ঐন্দ্রিলার মাথার যে পাশে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল, তার বিপরীত দিকে রক্ত জমাট বেঁধেছে। যা নতুন করে চিন্তায় ফেলে ডাক্তারদের।

    তা ছাড়াও আগের ঔষধ বদলে নতুন অ্যান্টিবায়োটিক চালু করা হয়। এ ঔষধ অভিনেত্রীর শরীরে সাড়া দেয় কি না, তা দেখার জন্য বাড়তি সতর্কতা নিয়ে পর্যবেক্ষণে করেন ডাক্তাররা। এরপরও সংক্রমণ না কমার  জ্বরও কমেনি। স্বাভাবিক কারণে ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়।

    ২০১৫ সালে টেন্টস নামক বিরল ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। প্রায় দেড় বছরের লড়াই শেষে ক্যানসার জয় করেন তিনি। ১৬টি কেমোথেরাপি ও ৩৩টি রেডিয়েশনের পর সুস্থ হন এই অভিনেত্রী। গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঐন্দ্রিলার ডান ফুসফুসে টিউমার ধরা পড়ে। আবারো মরণব্যাধি ক্যানসার থাবা বসায় অভিনেত্রীর শরীরে। দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ হয়ে পর্দায় ফিরেন এই অভিনেত্রী।

    গত ১ নভেম্বর ঐন্দ্রিলার ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার পর থেকে তার পাশে সবসময় ছিলেন সব্যসাচী। হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালেই ছিলেন ঐন্দ্রিলা। শেষ পর্যন্ত আইসিইউতে ছিলেন। তার লড়াইকে ভালোবাসায় স্মরণ করছে, সেই সময় বলেছিলেন, ‘আমার মায়ের কিছু হলে বাবা যেটা করত, আমিও সেটাই করছি।’

    ২০১৭ সালে কালার্স বাংলার ঝুমুর ধারাবাহিকের সেটে দেখা হয়েছিল দুই তারকার। ক্যান্সারকে হারিয়ে তখন সদ্য বিনোদনের জগতে পা রেখেছেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। এই সিরিয়ালের হাত ধরেই অভিষেক করেন তিনি এবং সব্যসাচী ছিলেন তার বিপরীতে। দুই তারকার পর্দায় রসায়ন মুগ্ধ করেছিল দর্শককে। অফস্ক্রিন তাদের বন্ধুত্বও গাঢ় হয়ে উঠেছিল।

    ২০২১ সালে যখন ঐন্দ্রিলা শর্মা ফের ক্যান্সারে আক্রান্ত হলেন, সেই সময় তার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন সব্যসাচী। গোটা লড়াইয়ে তার সহযোদ্ধা ছিলেন তিনি। বন্ধুকে খাইয়ে দিয়েছেন এবং গল্প পড়ে শুনিয়েছেন। ছোট ছোট ইচ্ছেগুলো পূরণ করেছেন। কঠিন মুহূর্তে তার অবলম্বন হয়ে উঠেছেন। যা দেখে অনেকেই প্রশ্ন করছেন, ‘এভাবেও ভালোবাসা যায়?’ মৃত্যু এবং ঐন্দ্রিলার মাঝে দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন অভিনেতা। তবে মৃত্যুর কাছে এবার হারলো ভালোবাসা।

    ক্যানসার জয় করে ‘ভাগাড়’ সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন ঐন্দ্রিলা। থেকে ছুটিও নিয়েছিলেন। হঠাৎ গত ১ নভেম্বর রাতে তার স্ট্রোক হয়। তারপর থেকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এই নায়িকা।

    ছোটপর্দায় ‘ঝুমুর’-এর সঙ্গে ঐন্দ্রিলার ক্যারিয়ার শুরু। এরপর ‘জীবন জ্যোতি’ ধারাবাহিকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন ঐন্দ্রিলা। সিরিয়ালের পাশাপাশি ‘শেষ থেকে শুরু’ সিনেমায় অভিনেতা জিতের বোনের ভূমিকায় দেখা যায় ঐন্দ্রিলাকে।

    মাহফুজা ২০-১১

     

    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

    Latest Posts

    spot_imgspot_img

    আলোচিত খবর